মালয়েশিয়ায় আটক সায়েদের স্বজনদের খোঁজ চায় বাংলাদেশ দূতাবাস
নাম সায়েদ মোহাম্মদ। বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। মুখে খোঁচা খোঁচা পাকা দাড়ি, মাথার চুলেও পাক ধরেছে। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। কারো সঙ্গে তেমন কোনো কথাও বলেন না তিনি।
সায়েদ মোহাম্মদ নামে বাংলাদেশি এ ব্যক্তি মালয়েশিয়ার মালাকা আম্ব ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক আছেন আজ ১০ মাস। বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে আটক করে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (শ্রম) মুশাররাত জেবিন মালাকা আম্ব ডিটেনশন ক্যাম্প পরিদর্শন করতে গেলে সেখানে আটক অনেক বাংলাদেশির মধ্যে সায়েদ মোহাম্মদের সন্ধান পান। এ ক্যাম্পে আটক ১০০ জন বাংলাদেশির সাক্ষাৎকার নেন তিনি। তবে সায়েদ কোনো কথা বলেননি। পরে তাঁকে কাগজে লিখতে বললে তিনি নিজের নাম আর বাড়ির ঠিকানা লেখেন। তাতে দেখা যায়, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের জামালপুর জেলার বাগেরহাটায়। সেই সঙ্গে তাঁর বাবার নাম মোজাম্মেল, মা-রাজিয়া খাতুন বলেও ওই কাগজে লেখেন তিনি।
মুশাররাত জেবিন এনটিভি অনলাইনকে জানান, বাংলাদেশে দূতাবাস থেকে আমাকে ওই ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। যাতে আটক বাংলাদেশিদের খবর নিয়ে তাঁদের দেশে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সে সময় ১০০ বাংলাদেশির সঙ্গে কথা হয়, তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। কিন্তু ওই ব্যক্তির (সায়েদ মোহাম্মদ) সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কোনো কথা বলেননি তিনি। কাগজে অগোছালোভাবে নিজের নাম পরিচয়টুকু কোনো রকমে লিখতে পেরেছেন।
জেবিন বলেন, ‘সায়েদের হাতের লেখা বাংলা দেখে বুঝতে পেরেছি তিনি বাংলাদেশি। তিনি মালয় ভাষায় কথা বলতে পারেন। তবে বাংলায় কোনো কথা বলেননি তিনি।’
জেবিন বলেন, ‘বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন পুলিশ সায়েদ মোহাম্মদকে আটক করে। কয়েক মাস জেল খাটার পরও পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো তাঁকে কেউ নিতে আসেনি। এদিকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে তাঁকে জেল থেকে বের হতে দিচ্ছে না।’
বাংলাদেশে সায়েদ মোহাম্মদের স্বজনদের খোঁজ করছে কুয়ালালামপুর দূতাবাস। সায়েদের স্বজনরা বা কোনো ব্যক্তি যদি তাঁর পরিবারের সন্ধান পান তবে তাঁকে কুয়ালালামপুর দূতাবাসের- ০০৬০৩৪২৫১০৮৪৩ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন মুশাররাত জেবিন।
জেবিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বাংলাদেশি অনেক লোক এখনো মালয়েশিয়া বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক আছে। আটকদের আত্মীয়স্বজনরা দূতাবাসে যোগাযোগ করছে। আটক ব্যক্তিদের আমরা ট্র্যাভেল পাস দিয়ে দ্রুত দেশে পাঠানোর চেষ্টা করছি।’
এ সময় অবৈধভাবে কোনো বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় না আসার অনুরোধ করেন বাংলাদেশ দূতাবাসের এ কর্মকর্তা।