মালয়েশিয়ায় ‘মিষ্টি বউ’দের নৈশভোজ
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মালয়েশীয়দের কাছে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তিও। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কাজের জন্য বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়া সরকারের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের এই সফলতার পেছনে আছেন তাঁদের স্ত্রীরা, যাঁরা জাতিতে মালয় হলেও মনে-প্রাণে বাংলাদেশি বউ। আর এমনই কয়েকজন স্ত্রী মিলে মালয়েশিয়ায় ‘কেলাব স্ত্রী’ বা কেআইবি নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। বাংলায় যাকে বলা যায় ‘মিষ্টি বউ’দের সংগঠন।
গত শনিবার কুয়ালালামপুরের গ্র্যান্ড কন্টিনেন্টালে ‘কেলাব স্ত্রী’-এর উদ্যোগে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়। নৈশভোজে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি এস কে শাহীন, লেবার উইং শাহিদা সুলতানা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ‘কেলাব স্ত্রী’র উদ্যোক্তা সূচি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দাতু কালাম, ইঞ্জিনিয়ার বদলুর রহমান খান প্রমুখ।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিশাল হলরুমে যেন বাংলাদেশিদের মিলনমেলা। বাংলাদেশি পুরুষরা বাহারি রঙের পাঞ্জাবি-পাজামা আর মালয়েশীয় স্ত্রীরা পরেছিলেন বাংলাদেশি পোশাক। সালোয়ার-কামিজ আর শাড়িতে তাঁদের বাংলাদেশি বলেই মনে হচ্ছিল।
অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে সমবেত কণ্ঠে প্রথমে মালয়েশিয়ার জাতীয় সংগীত ও পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে মালয়েশীয় নারীদের ‘আয়রন লেডি’ ঘোষণা করা হয়। ২৬ জন মালয়েশীয় আয়রন লেডিকে ক্রেস্ট তুলে দেন কুয়ালালামপুরের দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি এস কে শাহীন ও লেবার উইং শাহিদা সুলতানা।
যাঁদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয় তাঁরা হলেন—ইদা উস্মিতা বিনতে মালেক, সালবিয়ানা বিনতে ওসমান, সিতি নূর শরিফা সাফুরা, নূর ফাজিলা বিনতে মুসা, রোসেমিনা আলবানী, শায়লা বিনতে সাদিক, নূরায়হা বিনতে আব্দুল আজিজ, সুজার ওয়াতানি, জুলিয়ানা বিনতে মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আরিনা ওয়াটি মালিকি, হামিদা বিনতে আরশাদ, নাসিরা বিনতে নামসি, শাকিলা বিনতে মুনিফ, আগুস্তিন বিনতে সাফিন, নরহাসানা বিনতে আহমাদ রিফাই, সিতি রহমাহ বিনতে সালেহ, নূর ফারাহ হিদায়া জুলফা, ওয়ান হালিমাহ বিনতে ওয়ান ইসহাক, আনিতা আয়ু বিনতে মাট আরিফিন, মারিয়ানা বিনতে মুহাম, জারিমাহ, লিজা বিনতে হুলদি, আজলিয়ানি বিনতে মোহাম্মদ, নূর সাকিনা বিনতে আবদুল রাশিদ, সুসি, নূর আজলিজা বিনতে মাসলিম প্রমুখ।
ক্রেস্ট প্রদান শেষে এস কে শাহীন ও শাহিদা সুলতানা সুন্দর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য ‘কেলাব স্ত্রী’দের বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা বলেন, এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশের আন্তরিকতা ও বন্ধু দৃঢ় হলো। তারা যেমন বাংলাদেশের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে চায়, তেমনি বাংলাদেশও তাদের (মালয়েশীয়) পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা বলেন, ‘আমাদের স্বামীরা বাংলাদেশি। আমরা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি, যাতে তাঁরা বছরে একবার অন্তত একসঙ্গে হতে পারে। বিপদে-আপদে আমরা যাতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে ফ্যাশন শোর মাধ্যমে শিশুরা মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। এ ছাড়া মালয়েশীয় ও বাংলাদেশি শিল্পীদের নাচ ও গান উপস্থিত দর্শককে মুগ্ধ করে।