আপনার জিজ্ঞাসা
প্রতিষ্ঠান সুদ লেনদেন করলে বেতন হালাল হয়?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার এক হাজার ৭৩৩তম পর্বে মধ্য বাড্ডা, ঢাকা থেকে চিঠিতে কর্মক্ষেত্রে প্রাপ্ত পারিশ্রমিকে সুদের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন আয়েশা খাতুন। অনুলিখনে ছিলেন সজীব খান।
প্রশ্ন : আমি একটি এনজিওতে চাকরি করি। প্রতি মাসে যে বেতন পাই, সেটা আমার পারিশ্রমিক। আমার প্রশ্ন হলো, প্রতিষ্ঠান যদি সুদে লেনদেন করে, তাহলে আমার এ বেতন কি হালাল নয়?
উত্তর : এটা আপনার পারিশ্রমিক, তা ঠিক আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ পারিশ্রমিক আপনি কী কাজের বিনিময়ে নিচ্ছেন? যদি এটি সুদভিত্তিক কোনো প্রতিষ্ঠান হয়, সম্পূর্ণ কাজটাই যদি তাদের সুদভিত্তিক হয়, তাহলে আপনার উপার্জন হারাম হবে। সুদকে আল্লাহতায়ালা হারাম করেছেন। ইসলামে এটি একটি নিষিদ্ধ বিষয়। যদি এ সুদের লেনদেনে আপনি নিজেও একজন অংশীদার হন, তাহলে আপনার এ উপার্জন হারাম হবে এবং আপনি গুনাহগার হবেন। যেহেতু আপনি সুদের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন।
কিন্তু যদি আপনার কাজটা এমন হয় যে, আপনার কাজের সঙ্গে সুদের কোনো সম্পর্ক নেই। অফিসে যে কাজ আছে, সে কাজ সুদ সম্পৃক্ত নয়। অথচ ব্যাংকের বা অফিসের অন্যান্য লেনদেনের সঙ্গে কিছু সুদ থাকলেও সেটা আপনার বিষয় নয়। সে ক্ষেত্রে আপনার এই বেতনটা জায়েজ হবে, হারাম হবে না। আপনি বেতন নিতে পারবেন, যেহেতু সরাসরি সুদের সঙ্গে আপনার কাজের কোনো সম্পর্ক নেই।
তাহলে মূলনীতি কী? মূলনীতিটা হলো, কোনো ব্যক্তি যদি এমন কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করে, যে কাজটি সরাসরি সুদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাহলে তার উপার্জন এবং সুদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য তার এই কাজ—দুটিই হারাম হবে। কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি সরাসরি এমন কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, যে কাজের সঙ্গে সরাসরি সুদের কোনো সম্পর্ক নেই বা যে কাজের মধ্যে সুদ সরাসরি কোনোভাবে আসে না, সে প্রতিষ্ঠানের যদি সুদের সঙ্গে অন্য কোনোভাবে সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির উপার্জন হারাম হবে না; বরং জায়েজ হবে। এ ক্ষেত্রে তার চাকরি করাটাও জায়েজ হবে।