সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ৭ জেলায় ঈদ উদযাপন
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নারায়ণগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, চাঁদপুর, বরিশাল ও ঝিনাইদহ জেলায় উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ঈদ উদযাপনের একদিন আগে এসব জেলায় ঈদ উদযাপন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ ও ফতুল্লার কয়েকটি এলাকায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় হযরত শাহ্ সুফি মমতাজিয়া এতিমখানা ও হেফজখানা মাদরাসায় ‘জাহাগিরিয়া তরিকার’অনুসারীরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
গাজীপুরের টঙ্গী, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, পুরান ঢাকা, ডেমরা, সাভার এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, বন্দর, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ উপজেলা থেকে মুসল্লিরা নামাজে অংশ নেন। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ, দেশের শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
হযরত শাহ সুফি মমতাজিয়া মাদরাসার খতিব মুফতি মাওলানা আনোয়ার হোসেন শুভ জানান, হানাফির মাজহাবের মতে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে ঈদ পালন করার বিধান রয়েছে। তারা হযরত হানাফি (রা.) মাজহাবের অনুসারী। জাহাগিরিয়া তরিকার অনুসারীরা গত ১০০ বছর আগ থেকে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা অনুযায়ী ঈদ পালন করে আসছেন।
এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজীবপুর ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার চারটি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদের জামাত আদায় করেছেন মুসল্লীরা। আলাদা আলাদা ঈদ জামাতে প্রায় পাঁচ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন।
ঈদের জামাত আদায় করা রৌমারী উপজেলার শৈলমারী ইউনিয়ন গয়টা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল মোত্তালেব বলেন, আমরা প্রায় ৫ বছর ধরে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রমজানের রোজা রাখা, ঈদের নামাজ আদায় ও ঈদ উৎসব পালন করে আসছি।
ঝিনাইদহ জেলায়ও বিভিন্ন গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের একদিন আগেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। বুধবার সকাল ৮টায় হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ের গোলাম হযরতের মিল চত্বরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক মুসল্লি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কুলবাড়ীয়া, নারায়ণকান্দি, বৈঠাপাড়া, বোয়ালিয়া, চটকাবাড়ীয়া, ফলসী, পায়রাডাঙ্গা, নিত্যানন্দরপুর, শৈলকুপা উপজেলার ভাটই ও চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে মুসল্লিরা আসেন ঈদের নামাজ আদায় করতে। এছাড়া হরিণাকুণ্ডুর ভালকী বাজার, চরপাড়া ও পুড়াহাটি এলাকায় ইদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
ঈদ জামাতের সাধারণ সম্পাদক শাখায়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা এবং ঈদের নামাজ আদায় করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
চাঁদপুরে জেলার ৪০টি গ্রামের মানুষও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ ঈদ উদযাপন করছেন।
প্রতি বছর হাজীগঞ্জ, মতলব উত্তর, কচুয়া ও শাহরাস্তির ৪০টি গ্রামের মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে রমজানের রোজা রাখা এবং ঈদুল ফিতর উদযাপন করে।
বরিশালেও বুধবার ঈদ উদযাপন করছে কয়েক হাজার পরিবার।
বরিশাল সদর, বাবুগঞ্জ, হিজলা, মুলাদীসহ আরও কয়েকটি এলাকার এসব মুসলিম পরিবার বহু বছর ধরেই এভাবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছে।
বরিশাল নগরীর সাগরদী তাজকাঠী মিয়াবাড়ী এলাকায় জাহাগিরিয়া শাহ সুফি মমতাজীয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত নামাজে কয়েকশ মুসল্লি অংশ নেন। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। বুধবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের রাধানগর ও ৭৬ বিঘিসহ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরে পৃথক স্থানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা। সকাল পৌনে ৮টায় দিনাজপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও বিরল উপজেলার কামদেবপুর, কাজীপাড়া, ভারাডাঙ্গী, কাহারোলের মুকুন্দপুর, চিরিরবন্দরের রাবার ড্যাম মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে পৃথকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করেন প্রায় ২ হাজার মুসল্লি।