বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারলে সব সংস্কার ব্যর্থ হবে : ডিএসই চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) রোড শো করছে, কেন করছে, পৃথিবীর কোথায়ও খুঁজে পাবেন না পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকরা রোড শো করছে। এটা কেবল আমাদের দেশে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারলে আমাদের সব সংস্কার ব্যর্থ হবে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে ডিএসই চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফের সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
ডিএসইতে দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি লেনদেন হচ্ছে মন্তব্য করে মোমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারের চাহিদা মোতাবেক এই লেনদেন হওয়ার কথা না। কিন্তু হচ্ছে। বাজারের চাহিদা মতে, ডিএসইতে দৈনিক দুই-আড়াই হাজার কোটি লেনদেন হওয়ার কথা। অবশ্য অতীতে দুই-আড়াই হাজার কোটি লেনদেন হয়েছে। কৃত্রিম উপায়ে বাজার ভালো করা ঠিক হবে না। এটা বাজারের জন্য ভাল না। কারণ কৃত্রিম উপায়ে বাজার ভালো করলে বাজার এক সময় ফল্ট করবে। তখন বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমরা ডিএসইর সমস্যাগুলো বের করার চেষ্টা করেছি জানিয়ে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন. ইতোমধ্যে সমস্যার তালিকা লম্বা হচ্ছে, এগুলো সমাধানে কাজ করছি। যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বিনিয়োগকারীদের অর্থ সরিয়ে নিয়েছে ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড থেকে তাদের সাপোর্ট দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজের সম্পদ বিক্রি করে এবং লাইসেন্স বিক্রি করে ওইসব হাউজের বিনিয়োগকারীদের তহবিল যোগান দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিনের অনিয়ম বিষয়ে টাক্সফোর্স কাজ করছে জানিয়ে মোমিনুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। জুনের মধ্যে সব সংস্কার শেষ হবে না। তবে এরই মধ্যে কিছু সংস্কার হয়ে যাবে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সহায়তা করবে।
আমাদের পুঁজিবাজার অনেক সংকুচিত মন্তব্য করে মোমিনুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে পুঁজিবাজার অনেক পিছিয়েছে। তবে একই সময়ে বিশ্বের অন্যসব দেশের পুঁজিবাজারের চেয়ে এগিয়েছে। এমন অবস্থায় বর্তমান সময়ে দেশের সব স্টেকহোল্ডাররা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচকভাবে কাজ করছে।
এরইমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি জানিয়ে মোমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কাজের ফলাফল পেতে সময় লাগবে। অনেকটা একটি ভবনের ভিত্তি নির্মাণ যেমন বাইরে থেকে দেখা যায় না, সেরকম। তবে ভবনের উপরে নির্মাণ কাজটা সবাই দেখতে পায়। কিন্তু আসল কাজটা করা হয় ওই ভিত্তি নির্মাণের সময়।
সবকিছুই বিফলে যাবে, যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারি মন্তব্য করে মোমিনুল ইসলাম বলেন, এজন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪টি কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ৪টি কাজের মধ্যে দ্রুত সময়ে ভালো বেশকিছু কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এছাড়া নেগেটিভ ইক্যুইটির সমস্যা সমাধান, কর সুবিধা দেওয়া ও ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধ করা। এই ট্রেডিংয়ের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।