সবার মন জয় করার প্রতিজ্ঞা আমিরের
যেন পুনর্জন্ম হতে যাচ্ছে মোহাম্মদ আমিরের। স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেট মাঠে ফিরতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের এই মেধাবী পেসার। ১৭ বছর বয়সে অভিষেকের পর থেকেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিলেন। কিন্তু এক চরম ভুল তাঁর ক্যারিয়ারকে ফেলে দিয়েছিল সংশয়ে। দুঃসময়কে পেছনে ফেলা আমিরের সামনে আবার জ্বলে ওঠার সুযোগ। তবে শুধু ভালো ক্রিকেটার নয়, ভালো মানুষ হয়ে সবার মন জয় করাই তাঁর লক্ষ্য।
নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরার অনুমতি পেয়ে আমির উৎফুল্ল। বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি আবেগ চেপে রাখতে পারেননি, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর। আমি জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছি। আমি নিশ্চিত, সেসব শেষ হয়ে গেছে। আমি এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে উন্মুখ হয়ে আছি।’
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে পাকিস্তানের তখনকার অধিনায়ক সালমান বাট, পেসার মোহাম্মদ আসিফের সঙ্গে আমিরের বিরুদ্ধেও স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। দোষী প্রমাণিত হওয়ায় সব ধরনের ক্রিকেটে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ছয় মাস কিশোর সংশোধনাগারে কাটাতে হয়েছিল তাঁকে।
সে সময় ১৮ বছরের তরুণ আমির ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও শাস্তি কমানো হয়নি। তবে স্পট ফিক্সিং তদন্তে আকসু কর্মকর্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করায় নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই তাঁকে মাঠে ফেরার অনুমতি দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলে পাকিস্তান দলে সুযোগ পেতেও হয়তো সমস্যা হবে না।
অবশ্য ক্রিকেট-বিশ্বের কারো কারো অভিমত, স্পট ফিক্সিংয়ের মতো অপরাধে জড়ানোয় সালমান, আসিফ ও আমিরকে আজীবন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করা উচিত। তবে নিজের ভালো আচরণ দিয়ে সমালোচকদের মন জয় করে নেওয়ার আত্মবিশ্বাস আছে আমিরের, ‘আমার ফেরা নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে আমি নিশ্চিত যে তারা আমার আচরণ ও ভালো পারফরম্যান্স দেখে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবেন। আমার কাজ হচ্ছে ভালো খেলা। আর আমি নিশ্চিত যে আমি আরো ভালো খেলোয়াড়, আরো ভালো মানুষ হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারব। এটাই আমার লক্ষ্য।’
২০০৯ সালে অভিষেকের পর আমিরকে কেউ কেউ তুলনা করেছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে। সেই তুলনার যথার্থতা প্রমাণের আগেই ক্রিকেট থেকে ছিটকে যান আমির। ক্রিকেটে ফেরার সুখবর পাওয়ার কয়েক দিন আগে পূর্বসূরির সমবেদনাও পেয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমির সম্পর্কে আকরাম বলেছেন, “একজন তরুণ ভুল করেছিল আর সেজন্য তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। আমাদের তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত। নিষিদ্ধ খেলোয়াড় হিসেবে সে তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। তার ব্যাপারে আমাদের ‘ক্ষমা করা ও ভুলে যাওয়া’র নীতি গ্রহণ করা উচিত। আমিরকেও দেখাতে হবে যে সে এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো মানুষ।”