বিশ্বকাপের তরুণতম দল বাংলাদেশ
অভিজ্ঞতায় হয়তো তেমন এগিয়ে নেই। মাঠে পারফরম্যান্স কেমন হবে সেটাও এখন জানার উপায় নেই। তবে এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে একটা দিক দিয়ে সবাইকে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের ১৪টি দলের মধ্যে বাংলাদেশ দলের গড় বয়সই সবচেয়ে কম। সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, সাব্বির রহমান, এনামুল হকদের মতো তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দলের গড় বয়স ২৫।
বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণার শেষ সময় ৭ জানুয়ারিতে হিসাব করা গড় বয়সের তালিকায় বাংলাদেশের ঠিক পরেই আছে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া আফগানিস্তান। আফগানদের গড় বয়স ২৫.০৫। এবারের বিশ্বকাপের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটারও আফগানিস্তানের। ডানহাতি ব্যাটসম্যান উসমান গনির বয়স ১৮ বছর।
গড় বয়সের হিসাবে ৩০ ছাড়িয়েছে মাত্র দুটি দল, আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কা। এবারের বিশ্বকাপের দুই ‘বুড়ো’ ক্রিকেটারও আরব আমিরাতের—সাবেক অধিনায়ক খুররাম খান ও বর্তমান অধিনায়ক মোহাম্মদ তৌকির। কাকতালীয়ভাবে দুজনের জন্ম একই দিনে, ১৯৭১ সালের ২১ জুন! অর্থাৎ খুররাম ও তৌকির বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন ৪৩ বছর ছাড়িয়ে।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের একাদশ আসরের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় বিশ্বকাপে যে চার ক্রিকেটার ৩০০-এর বেশি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের তিনজনই শ্রীলঙ্কার। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা ও তিলকারত্নে দিলশান। অন্যজন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি। ৪০০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র একজনই, জয়াবর্ধনে। ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় শ্রীলঙ্কার পরেই আছে পাকিস্তান। তিন নম্বরে নিউজিল্যান্ড। টেস্ট দলগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে দলের সদস্যদের মিলিতভাবে এক হাজারের চেয়ে কম ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে।
অভিজ্ঞতার মতো সবচেয়ে বেশি শতকেও এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। জয়াবর্ধনে, সাঙ্গাকারা ও দিলশানের সৌজন্যে ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কানদের শতকসংখ্যা ৬৪। কোহলি-ধোনিদের কৃতিত্বে এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। তিন নম্বরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাও তেমন পিছিয়ে নেই। টেস্ট দলগুলোর মধ্যে অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকলেও শতকের হিসাবে ভারতের কাঁধে নিশ্বাস ফেলছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা। ভারতের চেয়ে একটি কম নিয়ে প্রোটিয়াদের শতক ৪৭টি।
এবারের বিশ্বকাপের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতক বিরাট কোহলি ও ক্রিস গেইলের—২১টি। শতকের সংখ্যা দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে গেছেন আর মাত্র ছয়জন—সাঙ্গাকারা, দিলশান, জয়াবর্ধনে, ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা ও রস টেলর।
বোলিং-কীর্তিতেও সবচেয়ে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। ম্যাচে সবচেয়ে বেশিবার চার উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব শ্রীলঙ্কান বোলারদের—৩৪ বার। এর মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গাই নিয়েছেন ১৬ বার। বাংলাদেশের বোলাররা ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছেন ২২ বার, দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে মাত্র একবার কম। এই তালিকায় বাংলাদেশের পেছনে ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান। পাকিস্তানের ১৯ বারের মধ্যে ১৩ বারই আফ্রিদির। মালিঙ্গা ও আফ্রিদি ছাড়া আর মাত্র তিনজন ১০ বারের বেশি ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছেন—ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড ও অস্ট্রেলিয়ার মিচেল জনসন।
এসব হিসাব করা হয়েছে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণার শেষ সময়ের (৭ জানুয়ারি ২০১৫) পরিসংখ্যানকে বিবেচনায় নিয়ে।