রোনালদোকে কাঁদিয়ে ইউরোর সেমিতে ফ্রান্স
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এলেন। দাঁড়ালেন, দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। শট নিতে গিয়ে কয়েকবার থমকে গেলেন। তারপর বলটাকে ঠিকই জালে জড়ালেন। পেনাল্টি শ্যুট আউটে পর্তুগালের প্রথম শটের পর আজ আর দলকে চাপে ফেলেননি। তবে, ম্যাচ শেষে ঠিকই তিনি পরাজিত দলে। এদিন কাঁদেননি সবার সামনে। রক্তক্ষরণ কী থেমে ছিল? ইউরোতে নিজের শেষ ম্যাচটি যে খেলে ফেললেন রোনালদো।
ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে আজ শনিবার (৬ জুলাই) মুখোমুখি হয় ফ্রান্স-পর্তুগাল। জার্মানির হামবুর্গের ভক্সপার্ক স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র থাকার পর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোল না এলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচের ভাগ্য। যেখানে ৫-৩ গোলে হারে পর্তুগাল। নিশ্চিত হয় বিদায়, অন্যদিকে সেমি ফাইনালে পা রাখে ফ্রান্স।
প্রথমার্ধের ম্যাড়ম্যাড়ে খেলা আড়মোড়া ভেঙে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। আক্রমণাত্মক ফুটবল প্রদর্শনীতে দর্শকদের উৎকন্ঠায় রেখেছে দুদলই। তবে, গোল ছাড়া সবই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ফ্রান্স সুযোগ পেয়েছে কমপক্ষে গোটা চারেক। কখনও কলু মুয়ানি মিস করেছেন ওয়ান টু ওয়ানে, কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে কামাভিঙ্গার শট। উসমান ডেম্বেলের একটি শট বার পোস্ট ঘেঁষে যাওয়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পায় পর্তুগাল। পর্তুগালও কয়েকটি আক্রমণ করেছিল। ব্রুনো ফার্নান্দেজের শট কিংবা ফিরতি বলে রোনালদোর ব্যাক হিল– কাজে আসেনি কিছুই। শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচের ফল গোলশূন্য। খেলা গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ে দুদল চেষ্টা চালিয়েছে। তবু, কেন যেন গোল হয়ে উঠছিল না। দুদিকেই প্রতিপক্ষ রক্ষণের চেয়ে নিজেদের ফিনিশিং ভুগিয়েছে ফ্রান্স ও পর্তুগালকে। যার ফলশ্রুতিতে খেলা টাইব্রেকারে যায়। টাইব্রেকে ফ্রান্সের হয়ে প্রথম শটে গোল করেন উসমান ডেম্বেলে। যার পাল্টা জবাবে গোল করেন রোনালদো। প্রথম তিন শটের তিনটিতেই সফল হয় ফ্রান্স। পর্তুগাল মিস করে তিন নম্বর শট। জোয়াও ফেলিক্স বল বারে মারলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। পরের দুই শটে গোল করে সেমি ফাইনাল নিশ্চিত করেন কিলিয়ান এমবাপ্পেরা।
এর আগে ইউরোপের দুই পাওয়ার হাউজ ফুটবল দল প্রথম ৪৫ মিনিটে বলার মতো কোনো আক্রমণও তৈরি করতে পারেনি সেভাবে। শুরু থেকেই অবশ্য চেষ্টা ছিল দুদলের। তবে, বল দখলের লড়াইয়ে রাখতে গিয়ে ঠিকভাবে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি কেউ। পর্তুগালের দিক থেকে বলার মতো এতটিই আক্রমণ ছিল পুরো প্রথমার্ধে। ১৫ মিনিটের ব্রুনো ফার্নান্দেজের নেওয়া শটটি কর্ণারের বিনিময়ে বাঁচায় ফরাসি রক্ষণভাগ। অন্যদিকে, কিলিয়ান এমবাপ্পে তার গতি দিয়ে পর্তুগিজ রক্ষণকে ছিটকে দিয়েছে একাধিকবার, পায়নি শেষ পরিণতি।
প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। ব্যবধান ৫৬-৪৪ শতাংশ। আক্রমণে কেউই ভালো করেনি। সেলেকসাওরা যেখানে আক্রমণ করেছে মোটে দুটি, ব্লুরা করেছে তিনটি। বেশ ছন্নছাড়াই মনে হয়েছে দল দুটিকে। আক্রমণভাগে যা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। প্রথমার্ধে রোনালদো ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই।