ফেসবুক নিউজ ফিডের ওপর ‘আরও নিয়ন্ত্রণ’ পাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা
ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন কয়েকটি ফিচার আনতে যাচ্ছে। এতে করে নিজেদের নিউজ ফিডে কী দেখবেন, তা আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা—এমনটা দাবি করেছে ফেসবুক। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, ফেসবুক অ্যালগরিদমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের নিউজফিডে কনটেন্ট প্রচার নিয়ন্ত্রণ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ নিয়ে বারবার তোপের মুখে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি।
এই যখন পরিস্থিতি, তখন ফেসবুক বলছে—ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী কনটেন্ট সামঞ্জস্য করা এবং কারও নিউজ ফিডে কী দেখা যাবে, তা নিয়ন্ত্রণের ফিচার যুক্ত করার ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ফেসবুকের পরীক্ষাধীন ফিচারের মধ্যে রয়েছে—ব্যবহারকারীর নিউজ ফিডে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের পোস্ট আরও বেশি বেশি দেখানো। এবং বিপরীতভাবে ফেসবুক গ্রুপ ও পাতা থেকে কম সংখ্যক পোস্ট নিউজ ফিডে দেখানো, ইত্যাদি৷
ফেসবুক বলছে, নতুন ফিচারগুলো যুক্ত হলে এখনকার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করা ‘আরও সহজ’ হবে—যেমন, এখন ফেসবুকে ‘ফেভারিটস’ ও ‘স্নুজ’ ফিচার রয়েছে মূলত সেটিংস অপশনের সাব-মেনুতে।
ফেসবুক বলেছে, নতুন ফিচারগুলো প্রথমে ‘আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অল্প সংখ্যক ব্যবহারকারীর মাধ্যমে পরীক্ষা করা শুরু করব। এর পর ধীরে ধীরে আগামী সপ্তাহগুলোতে’ এসব ফিচার ক্রমান্বয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
‘এটি আমাদের চলমান কাজের অংশ, যাতে করে ব্যবহারকারীরা তাঁদের নিউজ ফিডের ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ পেতে পারেন। এতে করে তাঁরা নিউজ ফিডে যা চান, অনেকটা তা-ই দেখবেন, এবং তাঁরা যা চান না, সেগুলো কম দেখানো হবে’ বলে এক ঘোষণায় জানিয়েছে ফেসবুক।
এর আগে গত জুনে একদল মার্কিন আইনপ্রণেতা কংগ্রেসে ‘ফিল্টার বাবল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট’ নামের একটি বিল উত্থাপন করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কোনো ধরনের অ্যালগরিদমিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই যেন প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বিলটি তৈরি করা হয়৷
মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উত্থাপিত বিলটির নকশার সঙ্গে ফেসবুকের মূল বা একদম শুরুর সংস্করণের অনেকটা মিল রয়েছে। ফেসবুক যখন কেবল যাত্রা শুরু করে, যখন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই ফেসবুক ব্যবহার করতেন, তখন ফেসবুকে ব্যবহারকারীরা তাঁদের বন্ধুদের প্রতিটি পোস্ট দেখতে পেতেন। সবচেয়ে সাম্প্রতিক পোস্টগুলো প্রথমে দেখা যেত, এরপর পুরোনোগুলো। কিন্তু, ফেসবুক বলছে—ব্যবহারকারীরা আসলে এমনটা চান না।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে—অ্যালগরিদমিক ফিড বন্ধ রাখা হলে কী ঘটে, তা যাচাই করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুক কমপক্ষে দুটি পরীক্ষা চালিয়েছে।
ফেসবুকের দুটি পরীক্ষার একটির ফলাফলে দেখা যায়—ব্যবহারকারীরা ফেসবুকে কম লগইন করছেন, কন্টেন্ট পড়তে কম সময় ব্যয় করছেন, এবং পোস্ট করার সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছেন।
ফেসবুক এ বছরের মার্চ থেকে কালানুক্রমিক ফিড অর্থাৎ সবচেয়ে সর্বসাম্প্রতিক কনটেন্ট প্রথমে দেখার (মোস্ট রিসেন্ট) ফিচার যুক্ত করেছে। যদিও ফিচারটি সরাসরি (বাই ডিফল্ট) পাওয়া যায় না।
ফেসবুকের মোবাইল অ্যাপে নিউজ ফিডে স্ক্রল করার সময় কখনও কখনও ‘সবচেয়ে সাম্প্রতিক’ নামের একটি অপশন দেখা যাবে। তবে, এ অপশন শুধু সেই নির্দিষ্ট ব্রাউজিং সেশনের জন্য কাজ করে। পরেরবার ফেসবুক অ্যাপটি খোলা হলে, তা আবার অ্যালগরিদমিক ফিডে ফিরে যাবে।