ফেসবুক ছাড়লে মানুষ সুখী হয়!
কথায় বলে, ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ। এর অর্থ হলো, মানুষের জন্য ত্যাগের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আসল সুখ। তবে ডিজিটাল এই যুগে এসে প্রবাদের অন্তর্গত অর্থ হয়তো কিছুটা পাল্টে গেছে। তাই এখন বলা হচ্ছে ফেসবুক ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।
না পাঠক, মোটেও বানিয়ে বলছি না। নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, আপনি যতই ফেসবুকের প্রতি আসক্ত হন না কেন, ফেসবুক ব্যবহার ছেড়ে দিলেই আপনি প্রকৃত অর্থে সুখী হবেন।
এনডিটিভি বলছে, ডেনমার্ক ভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক হ্যাপিনেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাদের গবেষণায় এমন ফলাফলই পেয়েছে।
ডেনমার্কে ১০৯৫ জন ব্যক্তির ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। এঁদের মধ্যে ৯৪ শতাংশই তাঁদের প্রাত্যহিক জীবনের কাজের অংশ হিসেবে নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করেন। এই ১০৯৫ জনকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়। এক ভাগকে বলা হয় সব সময়ের মতো নিয়মে ফেসবুক ব্যবহার করতে। বাকিরা ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ রাখেন।
এক সপ্তাহ পর দেখা গেল, যাঁরা নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করছিলেন তাঁদের ৮১ শতাংশের চেয়ে ফেসবুক ব্যবহার ছেড়ে দেওয়া ৮৮ শতাংশ মানুষ নিজেদের বেশি সুখী ভাবছিলেন। এমনকি ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁদের অন্য কাজে উদ্যোম বেড়েছে, নিঃসঙ্গতাবোধ কমেছে, দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা কমে গেছে এবং নিজেদের আরো দৃঢ়চিত্তের হতে সহায়তা করেছে।
ফেসবুক ত্যাগ করা এসব মানুষ জানান, এখন তাঁরা পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সামনা-সামনি কথা বলার জন্য সময় বেশি পাচ্ছেন। সেইসাথে পরিবারের প্রতি বাড়তি মনোযোগও দেখাতে পারছেন। যা আগে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার সময় পারতেন না।
গবেষকরা বলছেন, ফেসবুক ব্যবহারের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, আমরা আসলে কী চাই তার দিকে মনোযোগ দেই না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্যদের কী আছে, ফেসবুক ব্যবহারের সময় সেদিকেই বেশি মনোযোগ থাকে আমাদের।
হ্যাপিনেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেইক ইউকিং বলেন, ফেসবুকে আসলে প্রতিমুহূর্তে অন্যের ভালো খবরের গোলা বর্ষণ হয়। আর এসব দেখে অনেকের জীবনেই বিরূপ প্রভাব পড়ে।
৩৫ বছর বয়সী সোফি অ্যান ফেসবুক ত্যাগ করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পর আমি খেয়াল করলাম আগের চাইতে অনেক দ্রুত গতিতে দৈনন্দিন কাজগুলো করছি আমি। ফলে পুরো দিনটা কাজের জন্য ব্যয় করছি আমি।’