চাঁদের বুকে নামছে ইসরোর বিক্রম কিন্তু লুনা-২৫ কত দূরে?
শিগগির চাঁদের মাটিতে পা রাখতে চলেছে ভারত ও রাশিয়ার মহাকাশযান। গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) চন্দ্রযান-৩ থেকে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ আলাদা হয়ে গেছে। এরপরই শুরু হবে অবতরণ প্রক্রিয়া। রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতর নিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাখির পালকের মতো নামার কথা (সফ্ট ল্যান্ডিং) ‘বিক্রম’-এর। এখনও পর্যন্ত চন্দ্রযান-৩-এর অভিযান পরিকল্পনামাফিক চলেছে।
ইসরো ধাপে ধাপে পৃথিবীর উপগ্রহের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে মহাকাশযানটিকে। কিন্তু রাশিয়ার আগে কি ইসরোর চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামতে পারবে?
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার প্রত্রিকা অনলাইনের প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ১৪ জুলাই চন্দ্রযান-৩-এর উৎক্ষেপণ হয়েছে। আর ১১ আগস্ট রাশিয়া লুনা-২৫ কে চাঁদে পাঠিয়েছে । কিন্তু দেরিতে শুরু হলেও রুশ অভিযান ইসরোর প্রায় একই সময়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা। বরং লুনা–২৫ ইসরোর নির্ধারিত অবতরণের দিনের আগেই চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ফেলতে পারে। চাঁদে যাওয়ার জন্য লুনা- ২৫ সোজাসুজি পথ অবলম্বন করেছে। আর চন্দ্রযান-৩ গিয়েছে কিছুটা ঘুরপথে।
তাই ইসরোর অভিযানে সময় লাগছে ৪১ দিন। আর রাশিয়ার মহাকাশযান উৎক্ষেপণের মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই চাঁদে পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে ইসরো খরচ কমানোর জন্য পৃথিবী এবং চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ঘুরপথে চন্দ্রযান-৩-কে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। রাশিয়া তা না করে অধিক খরচে মন দিয়েছে। তাদের নির্ধারিত অবতরণের তারিখ ২১–২৩ এর আগস্টের মধ্যে। অন্যদিকে, ইসরো আগেই ঘোষণা করেছে, চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার আগামী বুধবার (২৩ আগস্ট) চাঁদে নামবে ।
এখন প্রশ্ন হল, রাশিয়ার লুনা–২৫ এই মুহূর্তে কোথায়? সেটি কি চন্দ্রযান-৩-কে অতিক্রম করে গিয়েছে? চাঁদের মাটিতে নামতে তার আর কত সময় লাগবে?
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, বুধবার রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস জানিয়েছে, লুনা-২৫ সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। এবার সে আপন গতিতে পৃথিবীর উপগ্রহটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, লুনা–২৫ এখনও ভারতের পিছনেই রয়েছে। ভারতের মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে যাত্রা সম্পন্ন করে ল্যান্ডার বিচ্ছিন্ন করার পর্বটিও সেরে ফেলেছে।
তবে লুনা–২৫ যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে আগামী দিনে ভারতের ‘বিক্রম’ চাঁদে নামার আগেই রাশিয়ার ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে ফেলবে কি না, সেটা দেখার অপক্ষো। যদিও অনেকে মনে করছেন, ইসরোর ঘোষিত দিনের আগেই ‘বিক্রম’ চাঁদে নেমে পড়তে পারে। কারণ বৃহস্পতিবার ল্যান্ডারটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এরপর অবতরণে ছয় দিন সময় নাও লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে আরও আগেই চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে ইসরো।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু এখনও অনাবিষ্কৃত। সেখানে যে আগে পা রাখবে, সেই ইতিহাসে নাম তুলে ফেলবে। এই দৌড়ে ভারত রাশিয়াকে হারাতে পারে কিনা, সে দিকেই নজর বিশ্ববাসীর।