ইরানের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ চান সৌদি যুবরাজ
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তাঁর দেশ ইরানের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ চায়। আল অ্যারাবিয়া টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে সৌদি আরব ইরানের সহযোগিতা চায়। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
তবে মোহাম্মদ বিন সালমান এটাও মনে করিয়ে দেন যে, ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের কিছু সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে- ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত অস্ত্রধারীদের সহায়তা করা। সৌদি যুবরাজ বলেন, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সৌদি আরব তাদের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে।
এদিকে, সৌদি যুবরাজের মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন খবর শোনা যাচ্ছে যে, ইরান ও সৌদি আরবের কর্মকর্তারা দুদেশের সম্পর্কোন্নয়নের জন্য ইরাকে একটি গোপন বৈঠক করেছেন। যদিও সৌদি আরবের সূত্রগুলো এ ধরনের খবর অস্বীকার করেছে। তবে, ইরানের পক্ষ থেকে এ খবরের সত্যতা স্বীকার কিংবা নাকচ করা হয়নি। ইরান বলেছে, তারা যেকোনো ধরনের সংলাপকে স্বাগত জানায়।
সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নেতা সৌদি আরব এবং শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইরানের মধ্যে আঞ্চলিক কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য বহু দশক ধরে উত্তেজনা চলছে।
কিন্তু, সাম্প্রতিক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত হওয়ায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে। বিশেষ করে, ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে।
সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জোট ইয়েমেনে সরকার-সমর্থিত বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৫ সাল থেকে ইরান সমর্থন দিচ্ছে হুতি বিদ্রোহীদের। যদিও বিদ্রোহীদের কোনো ধরনের অস্ত্র দেওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে ইরান।
এ ছাড়া লেবানন ও ইরাকে হস্তক্ষেপ করার জন্য ইরানকে দায়ী করে আসছে সৌদি আরব।
গত মঙ্গলবার রাতে প্রচারিত টিভি সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের যুবরাজ বলেন, তাঁর দেশ চায় না ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জটিল হয়ে যাক।
‘সবকিছুর পরও ইরান আমাদের প্রতিবেশী। আমরা তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই,’ বলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইরান সম্পর্কে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এই মন্তব্য অতীতের তুলনায় অনেক বেশি সংযত। এর আগে ২০১৮ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনিকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইয়ামেনের যুদ্ধ সম্পর্কে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো দেশ চাইবে না যে, তার সীমান্তে অস্ত্রধারী মিলিশিয়ারা থাকুক। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আলোচনা টেবিলে বসে সংকট সমাধানের আহ্বান জানান সৌদি যুবরাজ।