ক্রেডিট সুইসের মন্দায় বিশ্বের ব্যাংকিং খাতে নতুন সঙ্কটের শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যর্থতার পর ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য এতোটাই পড়ে গেছে যে তা ইউরোপের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে আর এতে বিশ্বের ব্যাংকিং খাতে আরও গভীর সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার সৌদি ন্যাশনাল ব্যাংক সংবাদ মাধ্যমে ঘোষণা দেয় যে, তারা সুইস ব্যাংকটিতে আর অর্থ লগ্নি করবে না, আর এরপরেই ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের দর রেকর্ড চার ভাগের এক ভাগেরও বেশি পড়ে যায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ধসের ঘটনার পর সৌদি ব্যাংকটিও নানা রকম সমস্যায় পড়ে।
এই অস্থিরতার কারণে সুইস শেয়ার মার্কেটে ক্রেডিট সুইসের শেয়ার বাণিজ্য ভীষণ বাধার মুখে পড়ে। পাশাপাশি অন্যান্য ইউরোপীয় ব্যাংকের শেয়ারেরও দর পড়ে যায়, কোনো কোনোটির দরপতন দুই অঙ্কে গিয়ে পৌঁছায়।
যুক্তরাষ্ট্রে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের সাম্প্রতিক ধসের পর নতুন করে স্বাস্থ্য ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নতুন শঙ্কার মুখে পড়ছে।
ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দর ১.৬০ সুইস ফ্রাঙ্ক (১.৭৩ ডলার) কমে যায় যা ভিত্তিমূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম। আর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সঙ্গে হিসেব করলে এই পতন ৮৫ শতাংশেরও বেশি।
গতকাল বুধবার সুইস সেন্ট্রাল ব্যাংক জানায়, ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের মূলধন ও তারল্য প্রয়োজন মতোই রয়েছে। তবে সংস্থাটি তারল্য সঙ্কট এড়াতে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানায়।
এদিকে, ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ারের দরপতনের কারণে আবারও আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাড়ে ব্যাংকগুলোর সামর্থের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানায়, তারা সুইস ব্যাংকটির সঙ্কটের দিকে দৃষ্টি রাখছে আর এ বিষয়ে বিশ্বের অন্যান্য সহযোগি সংস্থার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের মিলকেন ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম লির মতে, সৌদি ব্যাংকের সিদ্ধান্ত ক্রেডিট সুইসের গভীর সমস্যারই ইঙ্গিত দেয়। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, ‘যা অনুমান করা হয়েছিল তার চাইতেও বড় সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে সুইস ব্যাংকটি বলে মনে করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। আর তাদের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের অন্যান্য বৃহৎ ব্যাংগুলোর অবস্থা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের তদন্ত করে দেখার প্রয়োজনীয়তাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।’