শেয়ারবাজারে দরপতনের মধ্যে ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের মালিকানা বদল
জল্পনা-কল্পনা ও অনেক আলোচনা শেষে সংকটে থাকা সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের মালিকানায় পরিবর্তন এসেছে। ৩২৩ কোটি মার্কিন ডলারে ১৬৭ বছর পুরনো ব্যাংকটিকে কিনে নিয়েছে সুইজারল্যান্ডের আরেক ব্যাংক ইউবিএস। একইসঙ্গে দায় নিয়েছে ব্যাংকটির ৫৪০ কোটি ডলার ক্ষতির।
এদিকে, ক্রেডিট সুইসের মালিকানা পরিবর্তনও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি। আজ সোমবার (২০ মার্চ) শেয়ারবাজারের লেনদেন শুরু হলে ইউরোপের ব্যাংকগুলোর শেয়ার দাম কমতে থাকে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ সকালে লেনদেন শুরু হলে ইউবিএসের শেয়ারের দাম ১৬ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হয়, যা ২০০৮ সালের পর একদিনে ব্যাংকটির শেয়ারের দামের সর্বোচ্চ পতন। জার্মানভিত্তিক ডয়েচে ব্যাংকের শেয়ারের দামে পতন হয় ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। কমের্জ ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন হয়েছে আট দশমিক পাঁচ শতাংশ। আর প্যারিসভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিএনপি পরিবাসের শেয়ারের দামে পতন হয়েছে আট দশমিক দুই শতাংশ।
ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের সংকট কাটাতে গতকাল অর্থাৎ, রোববার বৈঠকে বসে ক্রেডিট সুইস, ইউএসবি ও সুইস কর্তৃপক্ষ। প্রথমে ১০০ কোটি ডলারে ক্রেডিট সুইসের শেয়ার কিনতে চায় ইউএসবি। পরে দাম বাড়িয়ে ৩২৩ কোটি ডলার নির্ধারণ করা হয়। তাতে ক্রেডিট সুইস রাজি হয়।
এক বিবৃতিতে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ইউবিএস আজ সোমবার ক্রেডিট সুইস ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে এবং সুইস অর্থনীতি রক্ষা পাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও বলেছে, তারা ইউবিএস ও ক্রেডিট সুইসকে ১০৮ বিলিয়ন ডলার বা ১০ হাজার ৮০০ কোটি ডলার তারল্য সুবিধা দেবে।
বিষয়টি নিয়ে জোনস ট্রেডিংয়ের প্রধান বাজার কৌশলবিদ মাইক ও’রউরকে বলেন, ‘ব্যাংক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটছে না। কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ করলেও এই সমস্যাটি দূর হচ্ছে না, বরং এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।’
রয়টার্স বলছে, ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের দামে পতন হয়েছে ৬২ শতাংশ। এর মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক প্রকাশ পাচ্ছে। শেয়ারহোল্ডাররা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে, ইউরোপীয় বাজারের প্রভাব পড়েছে এশিয়ার বাজারেও। হংকংয়ের সেং ইনডেক্সে সূচক কমেছে তিন শতাংশ। টোকিওর নিক্কেই ইনডেক্স সূচক কমেছে এক শতাংশ। ফ্রান্স ও জার্মানির শেয়ারবাজারের সূচক কমেছে যথাক্রমে এক শতাংশ করে। ক্রেডিট সুইসের হাতবদলে মার্কিন পুঁজিবাজারের ফিউচারও হ্রাস পেয়েছে। ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ফিউচার হ্রাস পেয়েছে ১১০ পয়েন্ট যা শতাংশের হিসেবে দশমিক ৩৪। এ ছাড়া এস এন্ড পি ৫০০ ফিউচার কমেছে দশমিক ২৫ শতাংশ।