ছয় দিন পর ‘সচল’ হওয়ার পথে সুয়েজ খাল
অবশেষে মিসরে সুয়েজ খালের ‘যানজট’ মুক্ত হওয়ার মুখে। প্রায় এক সপ্তাহ সুয়েজ খালে আটকে থাকার পর কন্টেইনারবাহী ‘এভার গিভেন’ জাহাজটিকে ফের ভাসানো বা সচল করা সম্ভব হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহণের কাজ করা তাইওয়ানের এম ভি এভার গিভেন জাহাজটি গত মঙ্গলবার হঠাৎ একদিকে হেলে আটকে গিয়েছিল সুয়েজ খালে। যার জেরে আটকে পড়ে ওই রুটের একাধিক পণ্য পরিবহণকারী জাহাজ। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল পণ্য ও তেল সরবরাহে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ৪০০ মিটার লম্বা এবং দুই লাখ টন ওজনের এমভি এভার গিভেন জাহাজটি ভূমধ্যসাগরের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারায়। তারপর ঘুরে গিয়ে তা আড়াআড়ি আটকে যায়।
ধারণা করা হয়, প্রবল বাতাসের ফলে জাহাজের দিক বিচ্যুত হয়। তারপর তা ঘুরে যায়। জাহাজের তলা খালের নিচে কাদামাটির মধ্যে আটকে গিয়েছিল।
ড্রেজিং-শিপ এনে, টাগ বোট লাগিয়ে, জোয়ারের সময় বেড়ে যাওয়া জল এবং উঁচু ঢেউ কাজে লাগিয়ে আটকাপড়া জাহাজটি সরানোর চেষ্টা চলছিল।
এভার গিভেন আটকে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগর বা লোহিত সাগর কোনো দিক থেকেই জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারছিল না। ফলে সুয়েজ খালে প্রচুর জাহাজ আটকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি পশুবাহী জাহাজও আটকে পড়েছে। এসব জাহাজে হাজার হাজার পশু রয়েছে। কেবল রোমানিয়ারই ১৩টি পশুবাহী জাহাজ আটকে পড়েছে। মিসর জানিয়েছে, ওই জাহাজে পশু চিকিৎসক, খাবার ও জল পাঠানো হয়েছে।
সুয়েজ খালে চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশ্ব। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে এক হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে। মিসরের প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে এক কোটি ২০ লাখ থেকে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার। খাল আটকে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশে পণ্য পৌঁছাতে দেরি হবে।
সুয়েজ খালে গত মঙ্গলবার থেকে আড়াআড়িভাবে আটকে থাকা কন্টেইনারবাহী জাহাজটি আজ স্থানীয় সময় সকালে অনেকটা সরানো সম্ভব হয়। ফলে আটকে থাকা শত শত জাহাজ এভার গিভেনকে পেছনে ফেলে গন্তব্যের দিকে দ্রুত যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেরিন সার্ভিসের গ্লোবাল প্রোভাইডার ইঞ্চকেপ শিপিং টুইটবার্তায় বলেছে, আটকে থাকা এভার গিভেন জাহাজটি সরাতে বা ভাসাতে তারা টাগবোট ও ড্রেজার ব্যবহার করেছে।
আর, ওয়াল স্ট্রিটের এক প্রতিবেদনে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ওসামা রবি জানিয়েছেন, আটকে থাকা জাহাজটি আংশিকভাবে সরানো সম্ভব হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে এশিয়ার জলপথে যাতায়াত যোগাযোগের বহুল প্রচলিত রুট এই সুয়েজ খাল। এই খালের বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব হোপ দিয়ে ঘুরেও ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে পারে জাহাজগুলো।