পশ্চিম ইউরোপে বন্যা : জার্মানিতে শতাধিক নিহত, নিখোঁজ ১৩০০
পশ্চিম ইউরোপে গত কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জার্মানি। দেশটিতে কয়েক দিনের বন্যায় এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পশ্চিম জার্মানির আহরওয়াইলার শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যায় নিখোঁজের সংখ্যা এক হাজার ৩০০ পর্যন্ত হতে পারে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা বলা মুশকিল। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইউরোপের আরেক দেশে বেলজিয়ামে বন্যায় প্রাণ গেছে অন্তত ২০ জনের।
এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ ও সুইজারল্যান্ডেও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তবে, জার্মানির বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশটির আবহাওয়াবিদেরা বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছেন। এসব এলাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার সারা দিন ও গত বৃহস্পতিবার রাতজুড়ে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে রাইন ও মোজেল নদীর শাখা পাহাড়ি নদীগুলোর দুকূল উপচে যায়। খরস্রোতা নদীর পানি ছোট ছোট শহরগুলোতে ঢুকে পড়ে। বাসিন্দারা কিছু বোঝার আগেই নদীগুলোর পানি রাস্তা ও ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে।
কোলন শহরের পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন কর্মী নিহত হয়েছেন।
গত বুধবার সন্ধ্যায় এবং বৃহস্পতিবার ভোররাতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ায় আহরওয়াইলার আইফেল শহরে বেশ কয়েকটি পুরোনো স্থাপত্য ধসে পড়েছে। বেশ কিছু লোক এখনও নিখোঁজ। নর্থ রাইন ওয়েস্টপেলিয়া ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যে উদ্ধারকাজ চলছে।
গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে লেবারকুসন নামের একটি বেসরকারি একটি ক্লিনিক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কোবলেঞ্ছ শহরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আহরওয়াইলার পুরো শহর ঝড়ের কবলে পড়েছিল। সেখানে প্রায় ৫০ জন লোক ছাদে আশ্রয় নিলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল চলমান বন্যাকে বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডি ক্রু আগামী ২০ জুলাই জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন।