ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : জিতলেন ম্যাক্রোঁই, স্বস্তিতে ইউরোপ
এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আরও পাঁচ বছরের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিলেন সে দেশের জনগণ। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী চরম ডানপন্থি মেরিন লা পেনের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মধ্যপন্থি ম্যাক্রোঁই। তবে, ফ্রান্সের ইতিহাসে এবার ডানপন্থিদের সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন লা পেন। খবর বিবিসির।
নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে গত দুই দশকের মধ্যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন ম্যাক্রোঁ। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মেরিন লা পেন পরাজয় মেনে নিয়েছেন।
ধারণার চেয়ে বেশি ব্যবধানে জয় পেয়েছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি পেয়েছেন ৫৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট। আর, ৪১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন লা পেন।
জয় নিশ্চিত হওয়ার পর, ম্যাক্রোঁ প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে উল্লসিত সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে; এখন তিনি দল-মত নির্বিশেষে ‘সবার প্রেসিডেন্ট’ হবেন।
এদিকে, পরাজয় সত্ত্বেও লা পেন বলছেন—তাঁর ভোটের সংখ্যা বিজয়ের চিহ্ন বহন করছে।
এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিজয়কে স্বস্তি নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। কেননা, অতি-ডানপন্থি লা পেন ক্ষমতায় এলে একের পর এক ইইউ-বিরোধী নীতি চালু করবেন বলে নির্বাচনি প্রচারে বলে আসছিলেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, ‘ফ্রান্স ও ইউরোপকে একসঙ্গে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।’
ম্যাক্রোঁকে সমর্থন করতে ফরাসি ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের ভলোদিমর জেলেনস্কি। ম্যাক্রোঁর জয়ের পর জেলেনস্কি তাঁর ‘সত্যিকারের বন্ধু’কে অভিনন্দন জানান। জেলেনস্কি বলেন, তিনি একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের অপেক্ষায় রয়েছেন।
ম্যাক্রোঁর জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও।
এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৭২ শতাংশের কিছু কম, যা ১৯৬৯ সালের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া ৩০ লাখের বেশি ভোট নষ্ট হয়েছে বা ফাঁকা গেছে। সে হিসাবে—প্রতি তিন জন ভোটারের মধ্যে এক জনের বেশি ভোট নষ্ট হয়েছে।
এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তাঁর সরকারকে জনগণের প্রেসিডেন্ট ‘নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণ খুঁজে বের করে জবাবদিহি করতে হবে।’
গতকাল রোববার ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা বা ‘রান-অফ’ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ১০ এপ্রিল প্রথম দফার নির্বাচনে ১২ প্রার্থী অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ২৯ শতাংশ এবং লা পেন ২৪ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দুটি পর্বে হয়ে থাকে। প্রথম রাউন্ডে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় রাউন্ড বা রান-অফে অংশ নিতে হয়। প্রথম রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী রান-অফে অংশ নেন।
প্রথম রাউন্ডের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ার পর ম্যাক্রোঁ ও লা পেন দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে অংশ নেন।