মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরো ৯ জন নিহত
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধীদের প্রতিবাদ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আজ বুধবার অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যম জানিয়েছে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানানোর একদিন পরই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে হতাহতের এসব ঘটনা ঘটল। খবর রয়টার্সের।
দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের একটি প্রতিবাদস্থলে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয় বলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া আরেক বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনে পুলিশের গুলিতে আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে ঘটনাস্থলে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে।
এদিকে দ্য মোনিওয়া গেজেট জানিয়েছে, মধ্যাঞ্চলীয় এ শহরটিতে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছে। মধ্যাঞ্চলের আরেক শহর মায়েনগিয়ানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে ছাত্রনেতা মোয়ে মিন্ট হেইন (২৫) জানিয়েছেন।
টেলিফোনে রয়টার্সকে মোয়ে মিন্ট বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর গুলি করেছে। একজন কিশোর নিহত হয়েছে, তার মাথায় গুলি লেগেছে।’
এসব শহরের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে, উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যে, মধ্যাঞ্চলের সাগাইং ও দক্ষিণাঞ্চলের দাউই শহরেও প্রতিবাদ হয়েছে বলে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
‘এই দেশের কেউই একনায়কতন্ত্র চায় না, এটি তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ,’ রয়টার্সকে বলেছেন চিন রাজ্যের আন্দোলনকারী সালাই লিয়ান।
মিয়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়ে চললেও আসিয়ান দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে কোনও অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি সংযম দেখানোর আহ্বান জানালেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও সিঙ্গাপুর সু চি ও অন্যান্য বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়ে গেছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই সামরিক শাসনবিরোধী গণতন্ত্রপন্থিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছে।