মিয়ানমারে লাশপ্রতি ১২০০০০ কিয়াত নিচ্ছে সেনাবাহিনী
মিয়ানমারে ৭০ দিনের জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত সাতশো মানুষের লাশ পড়েছে। শুক্রবার বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতদের লাশ পেতে স্বজনদের ৮৫ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ এক লাখ ২০ হাজার কিয়াত করে অর্থ গুনতে হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, শুক্রবার মিয়ানমারের বাগো শহরে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৮২ জন নিহত হয়। তাদের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ। বাগো ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ফেসবুক পোস্টে এমনটি বলা হয়েছে। রেডিও ফ্রি এশিয়ার খবরেও এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে জান্তা সরকারের দমনপীড়নে মারা গেছেন সাত শতাধিক মানুষ। এ ছাড়া তিন হাজারের বেশি রাজনৈতিক নেতাকে আটক করা হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়। পরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, চীন ও রাশিয়ার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের বহু জায়গায় চীন ও রাশিয়ার পতাকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।