যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনার নতুন ধরন ‘হয়তো বেশি প্রাণঘাতী’
নভেল করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরনটি যুক্তরাজ্যে ছড়িয়েছে, তা হয়তো অনেক বেশি প্রাণঘাতী। প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা তেমনই প্রমাণ পেয়েছেন বলে গতকাল শুক্রবার জানালেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
তবে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটাও জানিয়েছেন যে, যুক্তরাজ্যে যে দুটি করোনার টিকা প্রয়োগের কাজ চলছে, তা করোনার নতুন সংস্করণকে ঘায়েল করতে সক্ষম বলে আশা করা হচ্ছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে জনসন বলেন, ‘লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার এই নতুন ধরনটি যেমন অধিক দ্রুত ছড়াতে সক্ষম, তেমনই এতে মৃত্যুর হারও বেশি হতে পারে বলে কিছু প্রমাণ মিলেছে।’
ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ (এনএইচএস) করোনার নতুন ধরনটির সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যস্ত রয়েছে জানিয়ে বরিস জনসন বলেন, ‘অনেকটা এই নতুন ধরনটির কারণেই এনএইচএস এমন প্রচণ্ড চাপে রয়েছে।’
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড, ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন, লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং ইউনিভার্সিটি অব এক্সাটার নতুন ধরনের করোনার ভয়াবহতা নিরূপণে গবেষণা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তাদের তথ্য প্রমাণ নিউ ইমার্জিং রেসপিরেটরি ভাইরাস থ্রেটস অ্যাডভাইজরি গ্রুপের (নেভারটাগ) বিজ্ঞানীরা প্রত্যয়ন করেছেন।
নেভারটাগ বলছে, নতুন ধরনের ভাইরাস বেশি প্রাণঘাতী, এমন ‘বাস্তবিক সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে এই দাবি নিশ্চিত করে বলতে এখনো দেরি আছে।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরিসংখ্যানদাতা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে গতকাল শুক্রবার করোনায় এক হাজার ৪০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ৯৬ হাজারে পৌঁছেছে। যা ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স বলেছেন, ‘করোনার নতুন ধরন ৩০-৪০ শতাংশ বেশি ভয়ানক। তবে এর পক্ষে তথ্য উপাত্ত খুব শক্তিশালী নয়।’
অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ৫৪ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষের করোনা ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৪০১ জনের।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে এই নতুন ধরনের করোনার সংক্রমণ হয়। তারপর তা ধীরে ধীরে ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও ঢুকে পড়েছে। নতুন এই ধরন নিয়ে গোটা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করে বিশ্বের বহু দেশ।