ছিটমহলবাসীকে গণনাগরিকত্ব দেবে ভারত
ভারতের সীমান্তের ভেতরে থাকা ৫১টি ছিটমহলের ৫১ হাজার বাসিন্দার সবাই দেশটির নাগরিকত্ব পাবে। এত দিন পর দুই দেশের মধ্যে বহু বছরের ছিটমহল কলঙ্ক ঘুচবে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে দি ইকোনমিক টাইমস।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুই দিনের ভারত সফরে এ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে বলে এক কর্মকর্তার সূত্রে জানিয়েছে অনলাইনটি। স্থলসীমান্ত চুক্তিতেই সংশ্লিষ্ট দেশের ছিটমহলের অধিবাসীদের সেই দেশের নাগরিকত্বের ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ আছে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
দি ইকোনমিক টাইমসকে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যদিও ভারতের নাগরিকত্ব পেতে ওই দেশে ১২ বছরের বেশি সময় ধরে থাকতে হয়, তবু স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী ওই ৫১ হাজার নাগরিকের সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১১ সালে আদমশুমারি অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্তে বসবাসকারীদের অধিকাংশই ইসলাম ধর্মাবলম্বী এবং তাঁদের দেশ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটিই একটি ভূমিকা রাখবে।
এই পটভূমিতে দুই দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাগরিকত্ব প্রদানের আগে প্রত্যেকেই কোন দেশে থাকবে, তা পছন্দ করতে পারবে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ভারত সরকার নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ অনুযায়ী কোনো স্থান কিংবা এলাকা দখল অথবা গ্রহণের পর বসবাসকারীদের সবাইকে নাগরিকত্ব দিতে পারে। এর জন্য আলাদা করে কোনো আনুষ্ঠানিকতার দরকার নেই।
এর আগে গত সপ্তাহের রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ জানিয়েছিলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তি শান্তিপূর্ণভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় দাসিয়ারছড়া ছিটমহল পরিদর্শনকালে এক মতবিনিময় সভায় পঙ্কজ শরণ এ কথা বলেন।
পঙ্কজ শরণ বলেন, ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব যে চুক্তি হয়েছে তাতে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, যে যে দেশের অভ্যন্তরে ছিটমহলের নাগরিক, সে সে দেশের নাগরিকত্ব পাবে। ওই চুক্তির বাস্তবায়নে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। ছিটমহলবাসী এখন থেকে নতুন জীবন শুরু করবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত ৭ মে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল ভারতের নিম্নকক্ষ পার্লামেন্ট লোকসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর আগের দিন বিলটিতে সমর্থন দেন রাজ্যসভার সদস্যরা। এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ২৫৮ একর জমি এবং ভারত ৫১টি ছিটমহলের সাত হাজার ১১০ একর জমি পাবে।