ছিটমহল বিনিময় শিগগিরই : মমতা
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের ছিটমহল বিনিময় সমস্যা সমাধানে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ গত ১৩ এপ্রিল কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে মমতা এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সরকারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা বাসস।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠকে ছিটমহল ইস্যু প্রাধান্য পায়। এই ইস্যুর শিগগিরই সমাধান হবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রীকে আশ্বাস দেন। একই সাথে তিনি তাঁর বাংলাদেশ সফরকালে আতিথেয়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের একটি দাপ্তরিক ভাষায় পরিণত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।
কলকাতায় এক প্রশ্নের জবাবে শামসুর রহমান শরীফ বলেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই স্থলসীমা চুক্তির বিরোধিতা করে আসছিল। ভারতের সংসদে ওই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনী বিল আনতেও বাধা দেয় তারা।
কিন্তু চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তি নিয়ে তাঁর প্রবল বিরোধিতার জায়গা থেকে সরে আসতে শুরু করেন। পরিবর্তন করতে থাকেন তাঁর অবস্থান।
এর একটা কারণ অবশ্য বাংলাদেশ ছিটমহলবাসীদের একাংশের অবৈধভাবে ভারতীয় ভোটার তালিকায় নাম তোলা আর সেই প্রায় ২০ হাজার ভোটের সবকটি তৃণমূল কংগ্রেসের ঘরে চলে আসার নিশ্চয়তা।
তবে ভারতীয় জনতা পার্টির আসামের নেতৃত্বের একাংশ, আর অসমীয়া জাতীয়তাবাদী দলগুলো এখনো এই চুক্তির বাস্তবায়নের বিরোধিতা করছে।
১৯৭৪-এ ইন্দিরা গান্ধী আর শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে সই হয়েছিল স্থলসীমা চু্ক্তি। ওই চুক্তি অনুযায়ী ছিটমহলগুলো যেমন বিনিময় হওয়ার কথা, তেমনই ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় আর পশ্চিমবঙ্গে থাকা বেশ কিছু অপদখলীয় ভূমিও বিনিময় হওয়ার কথা।
বাংলাদেশের সংসদে ওই চু্ক্তি আগেই অনুমোদিত হয়, কিন্তু ভারতের পার্লামেন্ট তার সংবিধান সংশোধন করাতে পারেনি।
ফলে চুক্তি হওয়ার ২৫ বছর পরে, ১৯৯৯ সালে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। চুক্তিটিকে পুনরায় সক্রিয় করার জন্য প্রয়োজন হয় একটি প্রোটোকল চু্ক্তি, যেটা ২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ে সই করেছিল দুই দেশ।