নেপালে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১৮০৫, আরো প্রাণহানির শঙ্কা
নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার ৮০৫ এবং আহত হয়েছে ৪৭১৮জন। নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে বর্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়। ধসে গেছে দেশটির অনেক ভবন। বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়াদের উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চলছে।
৮১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে রাজধানী কাঠমান্ডুতেই নয়শ'র বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সরকারি হিসাবমতে সারা দেশে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ৩৪১ জন।urgentPhoto
এর আগে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল বেলা ২টায় এএফপিকে বলেছিলেন, কাঠমান্ডুতে ৭১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কাঠমান্ডুর কাছাকাছি ভক্তপুরে মারা গেছে আরো ৪৩ জন লোক।
ভূমিকম্পের কারণে এরই মধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে নেপাল। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সার্ক দেশগুলোর কাছে খাদ্য ও চিকিৎসা-সহায়তা চেয়েছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইউএসজিএস জানিয়েছে, নেপালে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মোট ২৪ বার ভূকম্পন হয়েছে।
কাঠমান্ডুর পশ্চিমে লামজুং এলাকায় প্রথম দফায় ৭.৯ মাত্রার ভূকম্পন হয়। এরপর দফায় দফায় ভূকম্পন অনুভূত হতে থাকে। তবে তীব্র মাত্রার নয়। এতে বহু লোক হতাহত হওয়া ছাড়াও শহরে জমেছে বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসাবশেষের স্তূপ।
১৯৩৪ সালে নেপালে ৮.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে সাড়ে আট হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এরপর আজকের ঘটনায় ব্যাপক মাত্রায় প্রাণহানি হলো।
ধারাহারা টাওয়ার ধস
প্রবল ভূমিকম্পে কাঠমান্ডুর প্রাচীন অনেক ভবন ধসে গেছে। এর একটি ১৯ শতকের ভবন ধারাহারা টাওয়ার। স্থানীয় সময় দুপুরের কিছু আগে ভবনটি ধসে পড়ে। সেখানে আটকা পড়ে দুইশর বেশি লোক।
টাওয়ারটি ১৮৩২ সালে নির্মিত হয়। গত ১০ বছর ধরে কাঠমান্ডুতে আগত পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এটি। ১৪ তলা ভবনটি থেকে এরই মধ্যে বেশ কিছু মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
১৪ পর্বতারোহীর মৃত্যু
শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে ব্যাপক বরফধস হয়েছে। এতে আট পর্বতারোহী নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জ্ঞানেন্দ্র শ্রেষ্ঠ বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিদেশি ও গাইড রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
এক বছর আগে প্রাণঘাতী বরফধসের পর আজ আবারও একই ঘটনা ঘটেছে। এতে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রোমানিয়ার পবর্তারোহী অ্যালেক্স গ্যাভান টুইটারে দেওয়া বার্তায় বলেন, ব্যাপক বরফধস হয়েছে। ওই সময় পর্বতের ওপরের অংশে অনেক আরোহী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে আমরাতাঁবু থেকে দৌড়াচ্ছিলাম।’
আরেক আরোহী ড্যানিয়েল মাজুর তাঁর টুইটার পেজে বলেন, বরফধসে এভারেস্টের বেজ ক্যাম্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর দলের সদস্যরা আটকা পড়েছেন। তিনি সবার জন্য প্রার্থনা করতে বলেছেন এভারেস্টে ওঠার মোক্ষম সময় ধরা হয় এপ্রিলকে। ২০১৪ সালের এপ্রিলে বেজ ক্যাম্পে বরফধসে ১৬ নেপালি গাইড নিহত হয়েছিলেন।