পুলিশের গুলিতে যুবক নিহত, বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স
ফ্রান্সে ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে পুলিশ গুলি চালালে এক যুবক নিহত হয়। এর প্রতিবাদে দেশটির রাজধানী প্যারিসে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ থেকে শুরু করে ফুটবলার এমবাপ্পে।
প্যারিসের রাস্তায় হলুদ মার্সিডিজ চালাচ্ছিলেন নাহেল এম নামে ওই যুবক। ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে পুলিশ তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এতে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর বুধবারই (২৮ জুন) শুরু হয় প্রতিবাদ। প্যারিসের শহরতলিতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। তারা ময়লা ফেলার বিনগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, বাসেও আগুন লাগানো হয়েছে। একটি শহরে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়।
এরপর বিক্ষোভ ছড়াতে থাকে। শুধু প্যারিস নয়, ফ্রান্সের অনেকগুলো শহরে বিক্ষোভ করে মানুষ। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ২৪ পুলিশ সদস্য আহত হন।
প্যারিসে দুই হাজার দাঙ্গারোধী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ অবশ্য প্রথমে জানিয়েছিল, ১৭ বছর বয়সী ওই যুবক পুলিশের এক কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে গাড়ি চালিয়ে আসছিল। তাকে থামানোর জন্য গুলি করা হয়।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার প্রচুর ভিডিও পোস্ট করা হয়। এতে দেখা যায়, গাড়ি থেমে আছে। দুই পুলিশকর্মী ওই গাড়ির পাশে। একজন রিভলভার তাক করে আছে। একটা গলার আওয়াজ ভেসে আসে, মাথায় গুলি করব। গাড়ি নিয়ে যুবক পালাতে গেলে পুলিশ গুলি চালায়। যুবক মারা যায়। নিহত নেহাল ছিল ডেলিভারি ড্রাইভার।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, ‘এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ক্ষমার অযোগ্য। এক যুবকের এমন মৃত্যুকে কোনো যুক্তি দিয়েই ব্যাখ্যা করা যাবে না।’
ফুটবল সুপারস্টার কিলায়ান এমবাপে এই ঘটনায় দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলিশ যেন মাথা ঠান্ডা রাখে। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, পুলিশ আইন মানেনি।
এই ঘটনার পর ফ্রান্সের পুলিশ নিয়ে আবারও সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছে, শহরতলির কম আয়ের মানুষ এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর পুলিশের আচরণ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।
গত বছর ট্র্যাফিক চেকের জন্য না থামার অভিযোগে ১৩ জনকে মেরেছে পুলিশ। ২০১৭ সালে পুলিশকে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে এই অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়েছে কি না, তানিয়ে ফ্রান্সে বিতর্ক শুরু হয়েছে।