অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে আইসল্যান্ডের একটি শহর
আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকিয়াভিকের পার্শ্ববর্তী গ্রিন্ডাভিক শহরে চার হাজার মানুষের বসবাস। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সেই শহরটি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। আর আগামী কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যেই সুপ্ত অবস্থায় থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত শুরু হতে পারে। শনিবার (১১ নভেম্বর) বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, শনিবার সকালের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গ্রিন্ডাভিক শহরের সকল বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আইসল্যান্ডের রাজধানীর খুব কাছে থাকা শহরটির ভূগর্ভস্থ এলাকায় ম্যাগমা স্থানান্তর হওয়ার পরই বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। ম্যাগমা স্থানান্তরে ওই এলাকায় শতাধিক ভূমিকম্প হয়েছে। আর এতে করেই সেখানে থাকা সুপ্ত আগ্নেয়গিরিতে ফের অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইসল্যান্ডের সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের প্রধান ভিদির রেনিসন এএফপিকে বলেন, ‘আমরা ওই এলাকার সমস্ত বাড়িঘর এবং অবকাঠামো নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন।’
৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল জায়গায় বিস্তৃত শহরটি রাজধানী রেইকিয়াভিকের দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থিত। শহরটির পাশেই রয়েছে সেভারতেসেনজি জিওথার্মাল প্ল্যান্ট, যেখান থেকে রাজধানীসহ আশেপাশের ৩০ হাজার বাসিন্দাকে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা হয়। গ্রিন্ডাভিক শহরের পাশেই অবস্থিত জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ব্লু ল্যাগন জিওথার্মাল স্পা রিসোর্ট। অগ্ন্যুৎপাতের শঙ্কায় চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রিসোর্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ভিদির রেনিসন বলেন, ‘ম্যাগমা এখন খুব অগভীরে রয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি বিস্ফোরিত হতে পারে বলে আমরা আশা করছি।’ আইসল্যান্ডের সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের প্রধান বলেন, ‘গ্রিন্ডাভিক শহরের মাটিতে একটি ফাটল দেখা গেছে, যা ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। সেই ফাটল দিয়েই অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে ধারণা করছি।’ তবে তিনি সমুদ্রের তলদেশে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা নাকচ করে দেননি।
ম্যাগমার স্থানান্তরে সৃষ্ট ভূমিকম্পে গ্রিন্ডাভিক ও এর আশেপাশের এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। বহুতল ভবন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এএফপি জানিয়েছে, আইসল্যান্ডে ৩৩টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। নতুন করে অগ্ন্যুৎপাতের শঙ্কায় দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গ্রিন্ডাভিকের আশেপাশের শহরগুলোতে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র ও সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গ্রিন্ডাভিকের বাসিন্দারা বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।