মাটিতে চুমু খেয়ে বাড়ি ফিরছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা
দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা-ইসরায়েল সংঘাত অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রূপ নিয়েছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরপরই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা। হাজার হাজার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি গাজার বিধ্বস্ত অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হেঁটে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে বিবিসি, আল-জাজিরা, এএফপিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে।
ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, শত শত বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নাগরিকরা উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া অঞ্চলের বালুকাময় পথ ধরে ধ্বংসস্তূপের দিকে (তাঁদের বাড়িঘর) ফিরে যাচ্ছেন। তাঁদের একজন ওয়াফা আল-হাবিল।
ওয়াফা আল-হাবিল আল-জাজিরাকে জানান, আমি খুব খুশি, কেননা আমি ফিরে যেতে পারছি। আমি গাজার মাটিতে চুম্বন করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমি গাজা শহর এবং আমার প্রিয়জনদের সাথে দেখা করার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছি।
২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস কর্তৃক ইসরায়েল আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয় গাজা-ইসরায়েল সংঘাত। অবশেষে আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) তা যুদ্ধবিরতিতে রূপ নেয়। যুদ্ধবিরতির পরপরই গাজার দক্ষিণের প্রধান শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আনন্দে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
তবে যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর ও নির্বিচার হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, ধ্বংস করা হয়েছে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তাদের অনেককেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছিল।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধ বিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ধ্বংস করা হয়েছে গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো।