উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা
আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আজ সোমবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হবিগঞ্জ ছাড়া সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে, উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি বাড়ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১১টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে ৯টি নদ-নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক আরিফুজ্জামান পূর্বাভাস অনুযায়ী, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। ফলে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, ভারতের মেঘালয় প্রদেশে ভারী বর্ষণের প্রবণতা কমে এসেছে।’
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। অন্যদিকে, হবিগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।’
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’
এসময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অতিভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে জানিয়ে আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘এর ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার নদ-নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার ৯টি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া, হাতিয়া, চিলমারী ও ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।’
বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও পোড়াবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে যমুনা নদীর পানি। সুরমার পানি কানাইঘাট, সিলেট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে, কুশিয়ারার পানি অমলশীদ ও শেওলায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম, ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা, খোয়াই নদীর পানি বাল্লা, পুরাতন সুরমা নদীর পানি দেরাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমলাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।