এবার ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীকে মারধর করলেন সনজিত
এবার একই দিনে ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীকে মারধর করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। আজ সোমবার রাজধানীর মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকালে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে ফেরার পথে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের গায়ের সঙ্গে কয়েকজনের ধাক্কা লাগে। এতে উত্তেজিত হয়ে সনজিত নেতাকর্মীদের গালমন্দ করেন এবং সামনে থাকা ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুবেল হোসেনকে থাপ্পর মারেন। রুবেল থাপ্পর মারার কারণ জানতে চাইলে সনজিত কোনো কথা না বলে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে চলে আসেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে আবারও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সনজিতের ধাক্কা লাগে। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে মারধর করেন তিনি। পরে দক্ষিণের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হলে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুবেল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে আমরা সবাই ফিরে আসছিলাম। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমরা বিদায় দিয়ে যখন ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে আসব, তখনই সনজিত দাদার গায়ের সঙ্গে নেতাদের স্পর্শ লাগলেই তিনি উত্তেজিত হয়ে গালমন্দ করেন। আর আমাকে একটি থাপ্পর মারেন। আমি পুরোই বোকা হয়ে যাই। আমি তো তাঁর (সনজিত) রাজনীতি করি না। আমি রাজনীতি করি কেন্দ্রে, তা হলে আমাকে কেন মারল? আমার কী অপরাধ জানতে চাইলেও তিনি কিছু না বলে সেখান থেকে চলে যান।’
এর আগে লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিনকে বেধরক পিটুনি দেন সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারীরা।
ওই সময় জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রুহুল আমিনের বড় ভাই ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি মারা যান। তাঁর মরদেহ নিতে রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা ও রুহুল আমিনের ভাবি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। লিফটে ওঠার সময় ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের বড় ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সনজিতের কয়েকজন অনুসারীও লিফটে ওঠেন। রুহুল সনজিতের অনুসারী কয়েকজনকে লিফট থেকে নেমে তাদেরও লিফটে উঠতে সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। এ সময় সনজিতের ভাইয়ের সঙ্গে রুহুলের কথা কাটাকাটি হয়। এর প্রায় ৪০ মিনিট পর সনজিতের অনুসারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের আটতলায় উঠে রুহুলকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। এ সময় সনজিত সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মারতে মারতে সনজিতের অনুসারীরা রুহুলকে আটতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসেন।
মারার পাশাপাশি রুহুল আমিনকে শিবির বলে অপবাদও দেন তারা। যদিও সোহাগ-নাজমুল কমিটির সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন রুহুল আমিন। পরে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে সহসভাপতির পদ পান।
গত বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে থাপ্পর মারেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এমন কিছুই হয়নি। আমি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।’