ডাকাতিকালে যুবলীগ নেতাকে ‘কুপিয়ে হত্যা’, আহত স্ত্রী হাসপাতালে
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় বাসায় ঢুকে ডাকাতিকালে মনির হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁর স্ত্রী মিলন বেগমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রামে আজ শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
এরই মধ্যে আহত মিলন বেগমকে আজ সকালে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে সকাল পৌনে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিমতানুর রহমান, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজিজুর রহমান মিয়া ও সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত মনির তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও আন্ধারমানিক গ্রামের আলি আহম্মদ বাসুর ছেলে। পেশায় তিনি ইটভাটার মাটির সর্দার ছিলেন। ১৫ দিন আগে তিনি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁর এক মেয়ে ও তিন ছেলে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মনির মাটির ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করতেন। বৃহস্পতিবার এক ইটভাটা মালিক মাটির জন্য তাঁকে দুই লাখ টাকা দেন। মনিরের নতুন বাসা হওয়ায় বাইরে কলাপসিবল গেট থাকলেও ভেতরে দরজা এখনো লাগানো হয়নি। শুক্রবার ভোর রাতে মই দিয়ে ডাকাতদল বাসার ছাদে ওঠে। ছাদের দরজা না থাকায় তারা বাসায় ঢুকে পরিবারের সদস্যদের বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে মনির ও তাঁর স্ত্রী মিলনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাদের আহত অবস্থায় ফেলে রেখে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
এ সময় মনিরের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, দুই লাখ টাকা ও ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় ডাকাতদল। পরে পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় মনিরের। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত মিলন বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাঈন বলেন, ‘ডাকাতরা ঘরে ঢুকে মনিরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তাঁর স্ত্রীকেও গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, ‘এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি জানাচ্ছি। নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য পুলিশকে বলেছি।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি এ কে এম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, এসপিসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডাকাতি করতে এসেই মনিরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।