ঢাবি শিক্ষককে অপসারণ কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ হাসান খানকে অপসারণের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ড. মোরশেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের কাছে আপিল দায়ের করে সাত মাস পরও কোনো ফল না পেয়ে অবশেষে রিট করা হয়েছে।
রিটের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ঢাবি প্রদত্ত অপসারণ আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন তাঁকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।
এ প্রবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে এবং মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। পরে ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছে আইনি পরামর্শ চাওয়া হয়।
লিখিত সুপারিশে বর্তমানে প্রয়াত মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমার মতে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা যদি আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেন সেক্ষেত্রে অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতির বিষয়টি উল্লেখ করে তাকে পুনরায় কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করা যেতে পারে।’
এরপর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেদিন অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভা সিন্ডিকেটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. আখতারুজ্জামান।