সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই : রিজভী
বর্তমান সরকার নিজেদের অপকর্মে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ভোটারদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বর্তমান নিশিরাতের অবৈধ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন এক নায়কতন্ত্র কায়েম করে গায়ের জোরে আজীবন ক্ষমতায় থাকার খোয়াব দেখতে শুরু করেছে। তারা উপলব্ধি করছে, তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। ক্রমশ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে তারা।
রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলে গণতন্ত্রের বুলি কপচায়, আর ক্ষমতায় এসে প্রথমেই গণতন্ত্রের ঘাড় মটকে দেয়। মূলত এই আওয়ামী চক্র সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি যেদিন বাদ দিয়েছে, সেদিনই সবাই বুঝে গেছে- বাকশাল নতুন কলেবরে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, “এখন সরকার দলের নেতারা প্রকাশ্যে তাদের নেত্রীর অভিলাষের কথা বলে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গত শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের বৈঠকে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যতদিন শারীরিকভাবে সক্ষম থাকবেন, ততদিন তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকবেন।’ এর আগে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন শেখ হাসিনা।’ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা আমৃত্যু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।’ আমরা মনে করি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে থেকে তাদের এই বক্তব্য অসাংবিধানিক ও সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।”
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ক্ষমতা থেকে চলে গেলে এ দেশের মানুষ তাদের বিচার করবে। এই বিচারের ভয়ে কৌশল করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছে। এ ছাড়া ক্ষমতা থেকে চলে গেলে লুটপাট-অপকর্মের মচ্ছব বন্ধ হয়ে যাবে। ভাগে-যোগে দেশটাকে লুটেপুটে নিয়ে কানাডায় বেগমপাড়া, আমেরিকায় সাহেবপল্লী, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, লন্ডন, ইউরোপ, দুবাইতে তাদের অর্থ পাচার বন্ধ হয়ে যাবে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘এই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু বলে লাভ নেই, কারণ সরকার নিজেই অন্যায়-অনিয়ম-অরাজকতা ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত। আপনারা দেখেছেন, সংবিধানের কথা বলে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, এমনকি বিচারকরাও রাজপথে নেমে এসেছেন। তারা রীতিমতো ব্যানার হাতে মিছিল স্লোগান দিয়ে রাজনীতিবিদদের মতো সভা-সমাবেশ করেছেন। বিচারক ও পুলিশ বাহিনী মানববন্ধন করেছে, যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এ ধরণের ঘটনা দেশের জন্য অশনিসংকেত। রাজপথে সরকার ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এমন ভূমিকা দেখে জনগণ ক্ষুব্ধ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার, বিচারকদের অন্য কোনো চেতনা থাকতে পারে না, তাদের একটি মাত্র চেতনাই থাকা দরকার, সেটি হলো ন্যায়বিচার।’