সিরাজগঞ্জে বেড়েছে যমুনার পানি, দুই বাঁধে হঠাৎ ধস
সিরাজগঞ্জে শহররক্ষা বাঁধের পুরাতন জেলখানা ঘাটে হঠাৎ ধস দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যেই বাঁধের ১০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে এ ভাঙন শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এছাড়া কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ঢেকুরিয়ায় নির্মাণাধীন ইকোপার্কের গাইড বাঁধে ধস নেমেছে। তবে ওই ধস ভয়ংকর হওয়ার আগেই তা মেরামতের কাজ শুরু করেছে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে এ ভাঙন শুরু হয়। শহররক্ষা বাঁধে ধস নামার খবর ছড়িয়ে পড়ায় চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাঁধ এলাকায় ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির ফলে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যমুনা নদীতে তীব্র ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে আজ দুপুর সোয়া ২টার দিকে শহররক্ষা বাঁধের জেলখানা ঘাট পয়েন্টে হঠাৎ ধস নামে। আধাঘণ্টার ধসে বাঁধের ১০০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটির ধস রক্ষায় দ্রুত জিও ব্যাগ ও ব্লক ডাম্পিং করা হচ্ছে।
এদিকে, আজ সোমবার সকালে কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ইকোপার্ক এলাকায় ধসে যাওয়া অংশে বালিবোঝাই জিও ব্যাগ ও প্লাস্টিক বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কাজিপুরের প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৌখিক নির্দেশনায় যমুনা নদীর ডান তীরে ইকোপার্কের জন্য ১৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ওই বছরই পার্কের জন্য নির্ধারিত স্থানে মাটি ভরাট করা হয়। একই বছর পার্ক এলাকায় যমুনা নদী তীর সংরক্ষণের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড শেষ করে।
গত কয়েকদিন ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢেউ আছড়ে পড়ে ইকোপার্ক এলাকায় তীর সংরক্ষণ ব্লকে ধস নামে। খবর পেয়ে ধস ঠেকাতে কাজ শুরু করেছে পাউবো।
বিলতচল গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, গত বছরও বন্যার সময়ে ইকোপার্কের পূর্ব পাশে ধস দেখা দিয়েছিল।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) হায়দার আলী জানান, কাজিপুর এলাকার নদী তীর সংরক্ষণ কাজের ঝুঁকিপূর্ণ ৫২০ মিটার মেরামতের জন্য চলতি বছর ২৭ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ইকোপার্ক এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হওয়ায় বন্যায় ভাঙন থেকে রক্ষায় ১০ হাজার বালির বস্তা ডাম্পিং করা হচ্ছে। আর শুষ্ক মৌসুমে সিসি ব্লক বসিয়ে পিচিং করে দেওয়া হবে।