স্ববিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী : রিজভী
বিএনপির জেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘স্ববিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশে নাকি খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে। তিনি কিন্তু দেশের ফুড সিকিউরিটির কথা ভাবেননি। তিনি একদিকে দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, অন্যদিকে তিনি সচিবদের ভবন নির্মাণের জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। আসলে এসবই করছেন তিনি তার দলের লোকজনকে আর্থিক সুবিধা দিতে।’
আজ মঙ্গলবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে দেশ এক ভয়ংকর সংকটের মধ্যে পড়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এদেশের মানুষকে বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে, ভয়ভীতির মধ্যে ফেলে দেয়ার কথা বলছেন। তিনি আসন্ন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, খাদ্য সংকটের কথা বলছেন। তিনি একদিকে বলছেন খাদ্যের অপচয় রোধ করতে অন্যদিকে আমরা দেখছি তার সরকারের লোকজন অর্থনীতির ভয়ংকর লুটপাট করছে। প্রধানমন্ত্রী যখন এ কথা বলছেন তখন কি প্রধানমন্ত্রীর মনে পড়ে তার জেলা পর্যায়ের ছাত্রলীগের এক নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন ফরিদপুরে। আজকে ওই টাকা যদি দেশে থাকতো তাহলে আমরা ওই টাকা দিয়ে খাদ্য কিনে গোডাউনে রাখতে পারতাম।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন আসন্ন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, খাদ্য সংকটের কথা বলছেন তখন আমরা দেখছি শুধুমাত্র সচিব এবং মুখ্যসচিবের বাসা বানানোর জন্য ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দের খবর সংবাদপত্রে এসেছে। এটা হচ্ছে একটা স্ববিরোধী সরকার। দুর্ভিক্ষ তো এখনই বিরাজমান। আজকে গোটা দেশকে আদিম অন্ধকার যুগে ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশ এখন অন্ধকারাচ্ছন্ন। মধ্যযুগের, আদিম যুগের কৃতদাস প্রথা প্রবর্তন করা হয়েছে। নতুন করে খাগড়াছড়িতে আমরা দেখছি মা তার সন্তানকে বিক্রি করার জন্য বাজারে গিয়ে দাম-দর করছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রয়োজন ছাড়া সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা এবং ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনকে টাকা পাইয়ে দেয়ার জন্য, অবৈধ আর্থিক সুবিধা দেয়ার জন্য, সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা করা হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে। মানবকল্যাণের এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ২৩ বছর আগে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন পথ চলা শুরু করেছে। ঝড় জলোচ্ছ্বাসে শুধু নয় স্বৈরাচারী দুঃশাসনে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদেরকে সর্বোচ্চ সেবাদানে প্রচেষ্টা চালিয়েছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। সমাজ সেবার মহান ব্রতকে সামনে রেখে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন এদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ে যিনি অবস্থান করছেন তিনি হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নেতৃত্বেই জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আরো সমৃদ্ধ হবে।’
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেডআরএফের কর্মকর্তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদ, জেডআরএফের ডাঃ এ এস হায়দার পারভেজ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, ডাঃ সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, খান মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, কাদের গণি চৌধুরী, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, মীর হেলাল, ডাঃ মোঃ ফখরুজ্জামান ফখরুল, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, কৃষিবিদ ছানোয়ার আলম, দবির উদ্দিন তুষার, শামীমা রাহিম, রাকিবুল হাসান চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, আসিফ হোসেন রচিসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।