ঝাড়ুদার-মালী-নৈশপ্রহরীও পোলিং অফিসার!
সুইপার, দারোয়ান, মালী, ঝাড়ুদার, আয়া, পিয়ন কিংবা নৈশপ্রহরী—পোলিং অফিসারের তালিকা থেকে বাদ যাননি কেউই। তাঁদের নিয়োগ দিয়েছেন উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম।
মিরপুরের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হজরত শাহ আলী মহিলা কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. শাহজাহান, মো. শুক্কুর আলী, মো. মোজ্জামেল হক, মো. সামসুল হক ও মো. সামসুল হক। তাঁরা ওই বিদ্যালয়ের দারোয়ান। এ ছাড়া নিয়োগ পেয়েছেন বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার দেলোয়ারা খাতুন ও রুনা আক্তার, নৈশপ্রহরী মো. জামাল, মালী মো. একরামুল হক, সুইপার মো. কবীর হোসেন, আয়া পারুল আক্তার ও পিয়ন মনোয়ারা বেগম।
গত ১৩ এপ্রিল শাহ আলম চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু করেন। এর তিনদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ওই কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অব্যাহতি চান। এর একটি কপি নির্বাচন কমিশনেও দাখিল করা হয়েছে।
আবেদনপত্রে ওই কর্মচারীরা বলেছেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা কখনো রাষ্ট্রীয় অধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করি নাই। আমরা সামান্য অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন কর্মচারী। নির্বাচনী বুথে ভোটারদের আঙুলে কালি লাগানো ছাড়া অন্য কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’
আবেদনপত্রে শাহ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন একটি নোটে বলেছেন, আবেদনকারীদের অক্ষরজ্ঞান কম। দায়িত্ব পালনে শুধু কালির ব্যবহার ছাড়া অন্য কাজ করানো কষ্টকর হবে।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর ৮ নম্বর বিধি অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচনে পোলিং অফিসারের প্যানেল প্রস্তুতের জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পাঠাতে অনুরোধ করবেন। সে অনুযায়ী, হজরত শাহ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চেয়ে অনুরোধ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অধ্যক্ষ তালিকা পাঠালে ঝাড়ুদার, মালী, আয়া, দারোয়ান, নৈশপ্রহরী, পিয়ন, সুইপারকেও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ হয়নি।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শাহ আলী মহিলা কলেজ থেকে যে ব্যক্তিদের নাম দেওয়া হয়েছিল, তাতে পদবি উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলমের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি সংশোধন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বিধি অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন। কিন্তু তাই বলে এ ধরনের লোকদের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়াটা ঠিক হয়নি।