বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আজকে শিক্ষকরা জেগে উঠেছে, শ্রমিকরা জেগে উঠেছে, ছাত্ররা জেগে উঠেছে। গোটা দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছে এই সরকারের পদত্যাগের জন্য। এই অবস্থার অবসান ঘটাতেই হবে।’ আজ রোববার (১৬ জুলাই) বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষে রাজধানীর বেইলি রোডে লিফলেট বিতরণের সময় তিনি এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফা আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটার জন্য আজকে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ। কোনোভাবেই এর বাইরে জাতির মুক্তি হবে না যদি শেখ হাসিনা টিকে থাকেন। সুতরাং, শেখ হাসিনার পতন এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই কেবল অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়।’

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েক মাস পর নির্বাচন। দেশের জনপদের পর জনপদ, এলাকার পর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে।  রক্তাক্ত ও ভয়াবহ সন্ত্রাসী পরিকাঠামোর মধ্যে তারা একটি ভয়াল নির্বাচন করতে চায়। যেখানে ভোটাররা যাবে না, সাধারণ মানুষ যাবে না ভোট দিতে, তারা ভয় পাবে, একটা ভয়ের সংস্কৃতি তারা চালু করতে চায়।’

বিএনপির এই মুখপাত্র আরও অভিযোগ করে বলেন, 'একটা সামান্য বক্তৃতার কারণে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে প্রতিদিন জেলা শহরের কোনো না কোনো আদালতে হাজির করা হচ্ছে, রিমান্ডে নির্যাতন করা হচ্ছে। আজকেও যখন মাগুরাতে তার নামে মামলায় হাজিরা দিতে গেছেন, সেখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আবু সাঈদ চাঁদের এবং তার আইনজীবীদের ওপর নানাভাবে আক্রমণ করেছে। এই হানাহানি আর রক্তপাতের সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

রিজভী বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ের মতো একটি ব্যবসায়ীদের সংগঠন আজকে আওয়ামী লীগের সুরে, ওবায়দুল কাদেরদের সুরে, হাছান মাহমুদদের সুরে বক্তব্য রাখছে। আজকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার কথা তাদের দলদাসে পরিণত করেছে এই সরকার। কোনো প্রতিষ্ঠানেই গণতন্ত্র নেই। নির্বাচন নেই বলেই আজকে এফবিসিসিআইয়ের মতো একটি সংগঠনের নেতারাও সরকারের দলদাসে পরিণত হয়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘আগামী ১৮ এবং ১৯ জুলাই বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে। এই দাবিতে আমাদের অবিরাম পদযাত্রা চলবে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত।’

লিফলেট বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, ঢাবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।