আগে নিম্নবিত্তরা কিনে খেতে পারত না, এখন মধ্যবিত্তরাও পারছে না : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগে দেশের নিম্নবিত্ত মানুষ কিনে খেতে পারত না, এখন সেটা মধ্যবিত্ত পর্যন্ত চলে এসেছে। তারা না পারছে হাত পাততে, না পারছে ভিক্ষা করতে। তিনি আরও বলেছেন, আওয়ামী লীগের অধীনের নির্বাচনে ভোটার ও বিরোধীদলের দরকার নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এসব কথা বলেন রিজভী। ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী চিত্রকর্মশালা ও কবিতাপাঠ’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জিয়াউর রহমান আর্কাইভ (জেডআরএ)।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশে করে রিজভী বলেন, ‘আপনার (শেখ হাসিনা) অধীনে নির্বাচন কি সেটা তো আমরা জানি। সেই নির্বাচনে ভোটারের দরকার নেই। দেশের জনগণের দরকার নেই। বিরোধী দল দরকার নেই।’
রিজভী বলেন, ‘এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। শেখ হাসিনা এই রাষ্ট্রকে অধঃপতিত করেছে তার ভয়ঙ্কর অত্যাচারিত শাসনের মধ্য দিয়ে। তিনি এখন কী করতে চান। তিনি কী ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করবেন?’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) তার মন্ত্রীদেরকে দিয়ে বলাচ্ছেন, পৃথিবীর সব দেশ ঠিক হয়ে গেছে। ঠিক হয়ে গেছে মানে, আপনার অধীনে নির্বাচন। আর আপনার অধীনে নির্বাচন মানে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। বাকিগুলোতে উপস্থিত ছিল পাঁচ শতাংশ। আর ২০১৮ সালের নির্বাচন করেছেন রাতে। ভোর হওয়ার আগেই ব্যালট বক্স পূর্ণ হয়ে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘জনগণের কথা, আন্তর্জাতিক শক্তির কথা, কারও কথাই ঠিক না। আপনার কথাই ঠিক? কিসের জন্য? কিসের জন্য এটা তো আমরা বুঝি। পৃথিবীর প্রতিটি স্বৈরাশাসক তাই করে। সব সময় তাই করেছে। ফ্লাইওভার, উড়াল সেতু, হাইওয়ে দেখায় যাতে চোখে পড়ে একটু। কিন্তু, সেদেশের মানুষ একটা ডিম কিনতে পারে না। বিশ্বের সব স্বৈরাশাসকরা এগুলোই দেখিয়েছে। কিন্তু, তারা কোনো স্কুল করেনি, ভালো হাসপাতাল করেনি। মানুষের যে হাহাকার অনাহার এগুলো তাদের চোখে পড়ে না।’
মধ্যবিত্তদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে আগে তো নিম্নবিত্ত মানুষ কিনে খেতে পারত না। এখন সেটা মধ্যবিত্ত পর্যন্ত চলে এসেছে। তারা পারছে না কারও কাছে হাত পাততে, পারছে না ভিক্ষা করতে। তাদের যে আয়, তা দিয়ে কোনো কিছু কিনে খেতে পারছে না। একটি ডিম কিনতে যদি ১৭ টাকা লাগে তাহলে ফ্লাইওভার দেখিয়ে আপনি কী করবেন।’
আয়োজক সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চিত্রশিল্পী ড. আব্দুস সাত্তার, বিএনপির সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান প্রমুখ।