এখনো ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে : কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে দেশের কয়েকটি কারাগারে বিশৃঙ্খলা করেন বন্দিরা। বাইরে থেকে কোনো কোনো কারাগারে চালানো হয় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। এই পরিস্থিতিতে কারাগারগুলো থেকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার দুই হাজার ২০০ বন্দি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে এক হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তারের পর ফের কারাবন্দি করা হলেও এখনও ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বকশীবাজারের কারা অধিদপ্তরের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
কারা মহাপরিদর্শক জানান, পলাতক বন্দিদের মধ্যে ৭০ জন জঙ্গি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে। এ ছাড়া আন্দোলনের পর ১১ জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পেয়েছে। বর্তমানে দেশে ৬৯টি কারাগার রয়েছে, যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি। এসব কারাগার পূনর্নির্মাণের কাজ চলছে।
সম্প্রতি কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া সাবেক এক সংসদ সদস্যের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, অনেক সময় বন্দিদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে হয়। পিজি হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় আমরা এড়াতে পারি না। কারণ, সেখানে আমাদের কারারক্ষীরা ছিলেন। তবে আমাদের দায়িত্বরত কারারক্ষীদের তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থার কারণে বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু, সেখানে নিরাপত্তার অভাব ছিল। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন আর বন্দিদের সরকারি হাসপাতালে পাঠাতে হবে না।
বর্তমানে কারাগারে বন্দির সংখ্যা জানতে চাইলে সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সময়ে বন্দিসংখ্যা বেড়েছিল। পরবর্তীতে সেটি কমে আসে।
সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, কারাগারে সব সময় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি থাকে। ধারণা ক্ষমতা ৪২ হাজার। ৫ আগস্টের আগে বন্দি ছিল ৫৫ হাজার। যদিও পরবর্তীতে সেই সংখ্যা কমে গিয়েছিল। এখন আবার গ্রেপ্তার চলছে ফলে বন্দির সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী, এখন যার সংখ্যা ৬৫ হাজার।
কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের এক প্রশ্নে সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, কারা অধিদপ্তরের লোগোতে নৌকা ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করে কারা অধিদপ্তরের লোগোর সঙ্গে নৌকা সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। তখন আমরা এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারি না। কারণ, এ উত্তরের কোনো নথি বা জবাব আমাদের কাছে নেই। তাই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে আমরা কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।