ভালো নেই বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা
চিরচেনা বঙ্গবাজারের রূপ পাল্টে গেছে। এখন ক্রেতাদের নেই আগের মতো সেই আনাগোনা, ফলে নেই বিক্রেতাদের হাঁকডাক-কর্মব্যস্ততা। প্রতিদিনের দোকান-খরচ ওঠাতেই এখন হিমশিম ব্যবসায়ীদের। গত বছর ৪ এপ্রিল এই মার্কেটে লাগা আগুনের সঙ্গে যেন পুড়ে গেছে তাদের ভাগ্য, হারিয়ে গেছে এই জমজমাট অবস্থা।
বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে অস্থায়ী তাঁবুতে চলছে বেচাবিক্রি। কিন্তু, ক্রেতার অভাবে তারা কেনা দামেও পণ্য ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। এতেও মিলছে না ক্রেতা। ফলে হতাশায় কাঁটছে দিন।
নাজমুল প্যান্টের ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবাজার মূলত পাইকারিতে সেরা। এখানে খুচরা দোকান খুবই কম। পাইকারিদের ১০ রমজানের আগেই ৮০ শতাংশ বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু, অন্যবারের তুলনায় এবারে আমাদের বিক্রি খুবই কম। অস্তিত্ব ধরে রাখতে নিরুপায় হয়ে দোকান খুলে বসে আছি যদি ক্রেতার দেখা মেলে।
আরিফুর রহমান নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, অন্যান্যবার ১২ রমজানের আগেই আমাদের শতভাগ বেচাবিক্রি শেষ হয়ে যেত। এরপর পাইকারির ক্রেতা পাওয়া যেত না। তখন খুচরা ক্রেতার ওপরে নির্ভর করে দোকান খোলা রাখতাম। কিন্তু, এবারে ক্রেতা নেই বললেই চলে।
২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারে আগুনে লাগে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদন্ত কমিটির তথ্য বলছে, এই আগুনে বঙ্গবাজার ও এর আশপাশে তিন হাজার ৮৪৫ দোকান পুড়ে গেছে। এতে অন্তত ৩০৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আগুনে প্রায় চার হাজার দোকানদার ও ১৫ হাজার কর্মচারীর ক্ষতি হয়েছে। আজ সেই বঙ্গবাজারে সরেজমিন গেলে দেখা হয় ইউসুফ পাঞ্জাবি দোকানের বিক্রেতা জুনায়েতের সঙ্গে। তিনি বলেন, দোকান খোলার তিন ঘণ্টার মধ্যে দুই হাজার টাকা পাঞ্জাবি বিক্রি করেছি। আগুনের লাগার আগে ঈদের এই সময় সাধারণত প্রতিদিন গড় অর্ধ লাখ টাকার পাঞ্জাবি বিক্রি হতো। এখন প্রতিদিন চার হাজার টাকা ঠিকমতো বিক্রি করতে পারি না।
বিসমিল্লাহ বস্ত্র বিতান থেকে ওয়ান পিস জামা কিনছেন সুমাইয়া। তিনি বলেন, জামা দেখছি। কিন্তু পছন্দে মেলাতে পারছি না। পছন্দ মতো জামা পাওয়া যাচ্ছে না।
নিউ আরিফ গার্মেন্টসে গেঞ্জি কিনতে আসা আলী হোসেন বলেন, গার্মেন্টসের যেসব মানের গেঞ্জি খুঁজছি, কিন্তু পাচ্ছি না। আরও বলেন, বঙ্গবাজারে আগে যেসব গেঞ্জি পাওয়া যেত, অনেক ঘুরেও সেসব গেঞ্জি দেখছি না।