তিন অস্ত্রধারী এসেছিল এক মোটরসাইকেলে
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গার নিজ বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
তিন যুবক মোটরসাইকেলে করে ওই বাড়ির সামনে যায়। এর মধ্যে দুজন বাড়িতে ঢুকে গুলি করে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্যের স্ত্রী খোরশেদ জাহান স্মৃতি।
ঘটনার পরপর এমপি লিটনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, এমপি লিটনের বুক, পেট ও হাতে গুলি লেগেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিউর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সংসদ সদস্যকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
এদিকে সংসদ সদস্যের স্ত্রী খোরশেদ জাহান স্মৃতি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সংসদ সদস্যকে তাঁর নিজ বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গায় গুলি করা হয়েছে। দুই দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে গুলি করে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। তার পরই তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে অজ্ঞাতনামা তিন যুবক একটি মোটরসাইকেলে করে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় এমপি লিটনের বাড়িতে যান। এর মধ্যে একজন মোটরসাইকেলে বসে ছিলেন। বাকি দুজন এমপির বাড়িতে ঢুকে। এ সময় গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এর পরপরই দুজন দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।
তবে কারা গুলি করেছে এ ব্যাপারে পুলিশ বা সংসদ সদস্যের পরিবার কেউ কিছু বলতে পারছে না।
এনটিভির রংপুর প্রতিনিধি এ কে এম মঈনুল হক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে সরকারি গাড়িতে করে সংসদ সদস্য লিটনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এনটিভির রংপুর প্রতিনিধি এ কে এম মঈনুল হক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে সরকারি গাড়িতে করেই সংসদ সদস্য লিটনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর শরীর জুড়ে রক্ত ছিল। চোখ বন্ধ ছিল।
সংসদ সদস্যের সঙ্গে আসা দুই নারীকে হাসপাতালে কাঁদতে দেখা গেছে। তাঁরা এমপি লিটনের মা ও বোন বলে জানা গেছে।
সংসদ সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে আসতে শুরু করেছেন। গাইবান্ধা থেকেও অনেকে রংপুর আসছেন।
২০১৫ সালের ২ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এক শিশুকে গুলি করে সারা দেশে সমালোচনার মুখে পড়েন এমপি লিটন। তিনি তাঁর লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সৌরভকে গুলি করেন।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর আরেকটি মামলা করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর শাহাবাজ গ্রামের হাফিজার রহমান।
ওই ঘটনায় মামলার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন এমপি লিটন। পরে ওই বছরই আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান। পরে জামিনে মুক্তি পান।