সাংবাদিক সৈকতের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় নিন্দা
প্রকাশিত সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু।
গত ৯ জুন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে সাবেক সাংসদ এ মামলা করেন।
সৈকত আফরোজ আসাদ সময় টিভি, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকমের পাবনা জেলা প্রতিনিধি এবং পাবনামেইলটোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক।
ঢাকার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে সৈকতকে মামলার বিষয়টি অবহিত করেন। পরে পাবনার গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন।
মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাবনা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। তারা এই মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রণেশ মৈত্র, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সিনিয়র সহসভাপতি মীর্জা আজাদ, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহীদ, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান স্বপন, সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, পাবনা টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিজভী জয়, ইয়াং জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি তারেক খান, সাধারণ সম্পাদক রনি ইমরান, ডেইলি অবজারভার প্রতিনিধি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ চন্দ্র মধু অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
এ ছাড়া নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাবনা চেম্বারের সভাপতি মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, সহসভাপতি ফোরকান রেজা বিশ্বাস বাদশা, মাছরাঙা টিভির উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান উৎপল মির্জা, শীর্ষ নিউজের প্রতিনিধি কামাল আহমেদ সিদ্দিকী, বাংলাভিশন টিভির প্রতিনিধি আখিনুর ইসলাম রেমন, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি রুমী খোন্দকার, কালের কণ্ঠ ও নিউজটোয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি আহমেদ উল হক রানা, দ্য ডেইলি স্টার প্রতিনিধি আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু, দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিনিধি সরোয়ার উল্লাস, দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিনিধি কৃষ্ণ ভৌমিক, একুশে টিভির প্রতিনিধি রাজিউর রহমান রুমী, যমুনা টিভির প্রতিনিধি সিফাত রহমান সনম, দৈনিক করতোয়ার প্রতিনিধি ইয়াদ আলী মৃধা পাভেল, এসএ টিভির প্রতিনিধি কলিট তালুকদার, ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রতিনিধি খাইরুল ইসলাম বাসিদ, গাজী টিভির প্রতিনিধি ইমরোজ খন্দকার বাপ্পিসহ পাবনার সব গণমাধ্যমকর্মীরা।
মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিকরা বিবৃতিতে বলেন, যেকোনো সংবাদ প্রকাশ হলেই সাবেক এমপি আরজু খন্দকার গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অনৈতিক প্রস্তাবের মাধ্যমে সংবাদ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। তাতে রাজি না হলে মামলা হামলারও ভয় দেখান। সেই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে অসত্য অভিযোগে পাবনা প্রেসক্লাবের সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এতে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিয়েছেন বলে সাংবাদিকরা মনে করেন। যুক্ত বিবৃতিতে সাংবাদিকরা আরও বলেন, আরজু খন্দকার যে সংবাদটির কারণে মামলাটি দায়ের করেছেন, তা প্রকাশের আগে সাংবাদিকতার নীতিমালা মেনে তার বক্তব্য নিয়েই তা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের মূলধারার বেশিরবাগ গণমাধ্যমে ওই সংবাদ প্রকাশিত হলেও সম্পূর্ণ আক্রোশবশত কেবল পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধেই তিনি মামলাটি করেছেন।
পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘অবিলম্বে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলাটি প্রত্যাহার করা না হলে জেলার সব সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’