গুণগত পুঁজিবাজার গড়ার লক্ষ্যে সিএসইর একগুচ্ছ প্রস্তাব
বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সংকট রয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেছেন, আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুবই কম। এই সংখ্যা কাঙ্খিত স্তরে উন্নীত করা প্রয়োজন। শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে গুণগত পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এজন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব করছি।
আজ রোববার (২ জুন) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট (২০২৪-২০২৫) সংবাদ সম্মেলনে সিএসই চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ নাকিব উদ্দিন খান, পরিচালক মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার প্রমুখ।
বর্তমানে ৩৪৯টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে জানিয়ে আসিফ ইব্রাহিম বলেন, স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য গুণগত মান সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা সন্তোষজনক সংখ্যায় উন্নীতকরণ করা খুবই প্রয়োজন। একই সাথে দেশে ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল শক্তিশালী বন্ড মার্কেট অতীব জরুরি।
বাংলাদেশের অর্থনীতি সমসাময়িক দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মার্কেট মূলধন—জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন মন্তব্য করে আসিফ ইব্রাহিম বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্কট রয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কম। এই সংখ্যা একটি কাঙ্খিত স্তরে উন্নিত করা প্রয়োজন।
গুণগত পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ, স্থায়ী উন্নয়ন, শক্তিশালী ও গতিশীল করতে সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটের লক্ষ্যে আসিফ ইব্রাহিম বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। এগুলো হলো- তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা; নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ২ থেকে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেওয়া; তালিকাভুক্ত বন্ডের সুদকে বিনিয়োগকারী নির্বিশেষে কর অব্যহতি দেওয়া। পাশাপাশি ব্লু বন্ড এবং গ্রীন বন্ডকে সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি সহ কর রেয়াত সুযোগ সুবিধা দেওয়া; লভ্যাংশের উপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনী লাভের উপর কর প্রত্যাহার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইটিএফ ইত্যাদি কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে কর রেয়াতি সুবিধা বৃদ্ধি, মূলধনী লাভের উপর কর কর্তন করা হলে তা চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করা; সদ্য প্রচলিত অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড এবং স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত উৎসাহিত করে লক্ষ্যে প্রথম ২ থেকে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতি রাখা; কমোডিটি এবং বিনিয়োগকৃত হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের উপর সকল ধরনের কর প্রত্যাহার রাখা; সহজভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জকে পাঁচ বছেরের জন্য কর অব্যাহতি দেওয়া; তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার হ্রাস করা সহ মূলধনী লাভকে কর অব্যাহতি দেওয়া সহ লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত রাখা।