সিএসইর চেয়ারম্যান হলেন হাবিবুর রহমান
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) নতুন চেয়ারম্যান হলেন একেএম হাবিবুর রহমান। সিএসইর পরিচালনা পর্ষদ হাবিবুর রহমানকে এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩ অনুযায়ী এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছে।
আজ বুধবার (২ অক্টোবর) সিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক এবং শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তিনি সিএসই চেয়ারম্যান হিসেবে আসিফ ইব্রাহিমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
গত আগস্টে সব স্বতন্ত্র পরিচালকের পদত্যাগের পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সিএসইতে সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করে। বিএসইসির অফিস আদেশ অনুযায়ী আলমগীর মোর্শেদ, প্রফেসর ড. মো. সাইফুল ইসলাম, একেএম হাবিবুর রহমান, ডা. মাহমুদ হাসান, এম. জুলফিকার হোসেন, নাজনীন সুলতানা, ফরিদা ইয়াসমিন স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। তাঁদের মধ্যে আলমগীর মোর্শেদ স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছে।
একেএম হাবিবুর রহমান একজন সিনিয়র সিভিল সার্ভিস অফিসার হিসেবে তাঁর কর্মজীবনে বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে কর্মরত অবস্থায় তাঁর উপর অর্পিত বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সফলভাবে পরিচালনা করেছেন। তিনি বিসিএস (ইঞ্জিনিয়ারিং: টেলিকমিউনিকেশন) অফিসার হিসাবে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বোর্ডে (বিটিটিবি) যোগদান করে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০০৮ পর্যন্ত বিটিটিবিতে বিভিন্ন পদে সফলভাবে কাজ করেছেন। পরে তিনি বিটিসিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিডিরেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে এমবিএ করেন।
পেশাগত কর্মজীবনে রহমান বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রযুক্তিগত এবং ব্যবস্থাপনাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, ফিলিপাইন, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড এবং ডেনমার্কের বিভিন্ন বিষয় বিশেষ করে ডেটা কমিউনিকেশন, নেটওয়ার্কিং, আইপি টেকনোলজি, গ্লোবাল ট্রেন্ড, কনভারজেন্স সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, ইনফরমেশন সিকিউরিটি সিস্টেম, ই-গভর্নমেন্ট পলিসি ম্যানেজমেন্ট, সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট কোর্স প্রভৃতি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার/সম্মেলন/প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন । এ ছাড়া তিনি তাঁর কাজের দায়িত্বের অংশ হিসাবে তার ব্যবহারিক দক্ষতা বিকাশের জন্য চীন, সিঙ্গাপুর এবং নরওয়েতে বেশ কয়েকটি কারখানায় পরীক্ষা/ভিজিট করেছেন। রহমান বিটিসিএল, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (অন লিয়েন) এ গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার মাধ্যমে প্রযুক্তি আপগ্রেডেশন, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, সংযোগ সংক্রান্ত ইত্যাদির বিভিন্ন বৃহদাকার প্রকল্পে অবদান রেখেছেন।
রহমান তাঁর চাকরি জীবনে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেরা প্রশিক্ষণার্থী হওয়ার জন্য ‘রেক্টর পদক’ ও ‘ইন্টিগ্রিটি প্রাইজ-২০২০’ অর্জন করেন। তিনি দেশে-বিদেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সেমিনারেও গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তাঁর চাকরি জীবনে রহমান টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেন্স কোম্পানি লিমিটেড, টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেড, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অফ বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদে যোগদান করেন। তিনি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি), অফিসার্স ক্লাব, ঢাকার সদস্য ও আইবিএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।