ডালমিয়াকে আশরাফুল হকের শ্রদ্ধার্ঘ্য
গত শতাব্দীর আশির দশকে ব্যাট-প্যাড খুলে রেখে ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন সৈয়দ আশরাফুল হক। জগমোহন ডালমিয়া তখন ছিলেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) সভাপতি। সে সময় থেকেই দুজনের সখ্য। একটা পর্যায়ে এই সখ্য পারিবারিক বন্ধুত্বে রূপ নিয়েছিল। আশরাফুল হকের সংগঠক হিসেবে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে পদচারণার পেছনে বিশাল ভূমিকা ছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সদ্যপ্রয়াত সভাপতির। বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই অকৃত্রিম বন্ধুর মৃত্যুতে সারা ক্রিকেট দুনিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে অন্যদের চেয়ে আশরাফুল হক একটু বেশিই শোকাহত, প্রিয়জন হারানোর বেদনায় মুহ্যমান।
রোববার রাতে দুঃসংবাদটা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান আশরাফুল হক। স্তব্ধ হয়ে বসে থাকেন কিছুক্ষণ। প্রিয় ‘দাদা’ এভাবে হুট করে চলে যাবেন, তা কল্পনাও করতে পারেননি। ডালমিয়ার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে, তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দিতে কলকাতায় যেতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু এত কম সময়ে তো আর ভারতীয় ভিসা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কলকাতায় যেতে পারছেন না এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সাবেক প্রধান নির্বাহী।
দূর থেকেই আইসিসির সাবেক সভাপতিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন আশরাফুল হক। এনটিভির সঙ্গে কথোপকথনে ডালমিয়ার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাঞ্জলি, ‘ভাবতেই পারছি না, দাদা আর নেই। তিনি শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেটের একজন অকৃত্রিম বন্ধুই নন, আমার অভিভাবক আর খুব কাছের মানুষও ছিলেন। ক্রিকেট নিয়ে আমরা যখনই কোনো সমস্যায় পড়েছি, দাদা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ভবিষ্যতেও তাঁর অভাব অনুভব করব।’
প্রিয় মানুষকে হারানোর বেদনায় বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদকের কণ্ঠ যেন বুজে আসতে চায়, ‘প্রিয়জনকে হারালে যতটা দুঃখ হয়, আজ আমি ঠিক ততটাই ব্যথিত। এই কষ্ট আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
বাংলাদেশের ক্রিকেট যে আজ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, তার পেছনে ডালমিয়ার বিশাল অবদান। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেট-সংগঠক সৈয়দ আশরাফুল হকও জানালেন সে কথা, ‘এটা মানতে দ্বিধা নেই, বাংলাদেশ যে আজ টেস্ট ক্রিকেট খেলছে, তার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনিই। তিনি সব সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাশে ছিলেন।’