বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নিয়ে বাকিদের পাঁচ ভয়
সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের রানার্সআপ বাংলাদেশকে থেকে বেশ সমীহের চোখেই দেখবে বাকি দলগুলো। আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নও হতে পারে এই বাংলাদেশ। পাঁচটি কারণে বাংলাদেশের এমন জোরালো সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে স্কাইস্পোর্টস।
তরুণ খেলোয়াড়
চলতি বছরের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমেই বোঝা যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে প্রতিভাবান নতুন খেলোয়াড় পাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দলের জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়রা নতুনদের কাছ থেকে ভালোই সাফল্য পাচ্ছেন।
বাংলাদেশের উজ্জ্বল নতুন প্রতিভার মধ্যে আছে ২০ বছর বয়সী মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বোলিংয়ের তোপে ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন। অপরদিকে ভারতের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের (ওডিআই) অভিষেকেই ৫০ রানে পাঁচ উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৩ রানে ছয় উইকেট নেন তিনি। ২০১৫ সালের একদিনের ম্যাচের আইসিসি দলে স্থান পেয়েছেন মুস্তাফিজ। চলতি গ্রীষ্মেই তিনি কাউন্টি দল সাসেক্সের হয়ে খেলবেন। তবে ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচটি মিস করবেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশও চায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে এশিয়া কাপে ফিরে আসুন।
আর আন্ডারডগ নয়
বেশ কিছুদিন ধরেই একদিনের ক্রিকেটে বেশ সফল বাংলাদেশ দল। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের দলের সঙ্গে গত চার সিরিজে বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে। গত ১২টি ওডিআইয়ের ১০টিতেই জয় পেয়েছে তারা। টি-টোয়েন্টিতেও ধারাবাহিকভাবে সফল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠে। তাই বাংলাদেশকে আর আন্ডারডগ বলার উপায় নেই।
এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সাত উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান করে। সাব্বির রহমান ৫৪ বলে ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। আল-আমিন হোসেনের ৩৪ রানে তিন উইকেট এবং সাকিব আল হাসান ১২ রানে দুই উইকেট নেয়। আট উইকেটে ১২৪ রানেই থেমে যায় শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে আরো সাফল্য পান আল-আমিন। মাত্র ২৫ রানে তিন উইকেট নেন এই পেসার। সাত উইকেটে ১২৯ রানেই থেমে যায় পাকিস্তান। পরে সৌম্যের ৪৮ রানের ওপর ভর করে জয় পায় বাংলাদেশ। এই নিয়ে ওডিআই ও টি-২০ দুই ফরম্যাটেই এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলল বাংলাদেশ।
উপমহাদেশের কন্ডিশন
এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির শেষটা ভালোভাবে না হলেও এতে সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় উপমহাদেশের কন্ডিশনে ভয়ংকর হতে পারে ভারত ও বাংলাদেশ। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের শীর্ষ উইকেট শিকারি বাংলাদেশি পেসার আল-আমিন হোসেন, ১১ উইকেট (গড়ে ১২ দশমিক ১৮)। শীর্ষ রান সংগ্রাহকও বাংলাদেশের সাব্বির রহমান, ১৭৬ (গড়ে ৪৪)। উপমহাদেশের অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ১১টিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। উপমহাদেশের কন্ডিশনে বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
সাকিব আল হাসান
স্কাইস্পোর্টসের দৃষ্টিতে সাকিব আল হাসান নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো ক্রিকেটার। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্যে সাকিবের অবদান থাকবে। তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি একই সঙ্গে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হয়েছিলেন। অবশ্য পরে টেস্ট ও টি-২০তে অশ্বিন ও শেন ওয়াটসনের কাছে স্থান হারিয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে সাকিবের সাফল্য আহামরি নয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ১৮ ম্যাচে দুটি অর্ধশতকে সাকিবের রানের গড় মাত্র ২৪.৩৩। তবে টি-টোয়েন্টিতেও বোলিংয়ে সফল সাকিব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০ উইকেট নিয়েছেন সাকিব (গড় ২১, ইকোনমি ৬ দশমিক ৪৫)। এবারের টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম তারকা এই সাকিব।