প্রথম দিনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
২০০৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা আগের আটটি টেস্টেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচ হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। তবে এবার যে এত সহজে হার মানবেন না, তা প্রথম দিনেই বুঝিয়ে দিয়েছেন মুশফিক-সাকিব-মিরাজরা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালিয়েছেন ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। দিন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৫৮ রান। বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে সাতটি উইকেট।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে মেহেদি হাসান মিরাজের জন্য। অভিষেক টেস্টেই পাঁচ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছেন এই ডানহাতি অফস্পিনার। মিরাজের আগে টেস্ট অভিষেকেই পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে আরও ছয় জনের। তবে সবচেয়ে কম বয়সে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মিরাজ। দ্বিতীয় দিনে আরও উইকেট নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়ার হাতছানিও আছে ১৯ বছর বয়সী এই তরুণের সামনে। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট অভিষেকে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি এখন আছে সোহাগ গাজীর দখলে। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৪ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুতেই বিপাকে পড়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথম নয় ওভার নির্বিঘ্নে কাটাতে পারলেও এরপর টানা তিন ওভারে তিনটি উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় সফরকারীরা। নিজের টানা দুই ওভারে মিরাজ নিয়েছেন বেন ডাকেট ও গ্যারি ব্যালান্সের উইকেট। আর মাঝখানের ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। চতুর্থ উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন জো রুট ও মইন আলী। কিন্তু মধ্যাহ্নবিরতির পর রুটকে সাজঘরমুখী করেছেন মিরাজ। ৪০ রান করে ফিরে গেছেন রুট। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করেছিলেন বেন স্টোকস। সাকিবের বলে মেরেছিলেন বিশাল এক ছক্কা। তবে কয়েক ওভার পরেই প্রতিশোধ নিয়েছেন সাকিব। বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন স্টোকসকে (১৮)।
১০৬ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ইংল্যান্ড। খেলার পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। কিন্তু এ সময় দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান মইন ও জনি বেয়ারস্টো। ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। চা বিরতির পর আবার এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান মিরাজ। ৬৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন মইন। দিনের শেষভাগে বেয়ারস্টোও হয়েছেন মিরাজের শিকার। আউট হয়েছেন ৫২ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে। অষ্টম উইকেটে ২১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিনের বাকি সময়টা নির্বিঘ্নেই পার করতে পেরেছেন ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ। প্রথম দিন শেষে ৩৬ রান করে অপরাজিত আছেন ওকস।
প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি, ৩৩ ওভার বোলিং করেছেন মিরাজ। ৬৪ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। সাকিব দুই উইকেট নিয়েছেন ৪৬ রান খরচে। আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম ১৭ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন মাত্র ২৮ রান।