ইডেনে মঙ্গলবার বাজবে কার জয়গান?
পাকিস্তান দলের অনুশীলন শেষ হতে তখনও ঘণ্টা দেড়েক বাকি। তার আগেই ইডেন গার্ডেন্সের দুই নম্বর গেটের সামনে জনতার ভিড়। উদ্দেশ্য, বাবর-রিজওয়ানকে একবার চোখে দেখা। গেটে উৎসুক জনতাকে দেখে এগিয়ে গেলাম। সেখানে গিয়ে খানিকটা স্তব্ধ হলাম। কারণ, এক মুহূর্তে মনে হলো ভারত নয়, আছি পাকিস্তানে। যেই পাকিস্তান দল নিয়ে এত বৈরীতা, সেই দলের জন্যই যেন ভালোসার ফুল ফুটল ইডেনের আঙিনায়।
এই ভালোবাসা দেখতে গেট থেকে বেরিয়ে মিশে গেলাম ভক্তদের মাঝে। তার মাঝে অর্নব নামের এক ভক্তের সঙ্গে কথা। বাবর আজমের এই ভক্ত বললেন, ‘আজ অফিস থেকে ছুটি নিয়ে সরাসরি এখানে এসেছি। শুনেছি পাকিস্তান দল অনুশীলন করছে। ম্যাচের দিন তো আর এখানে আসা যাবে না। তাই আজই চলে এলাম। ঘণ্টা খানেক হলো দাঁড়িয়ে আছি। কখন বাবর ভাইকে দেখব। বাবর ভাইকে আমাদের পরিবারের সবাই ভালোবাসে। তাকে দেখার সুযোগ মিস করতে চাই না।’
পিয়ালি নামের এক নারী ভক্তের কণ্ঠেও এক সুর, ‘পাকিস্তান দলের ভীষণ ভক্ত আমি। কিন্তু এই দেশে তো তাদের আসা হয় না। যখন এবার এলেন, দেখার সুযোগ ছাড়তে চাইনা।’
অবশ্য ভক্তদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে ভুল করেননি বাবর-রিজওয়ানরা। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ অনুশীলন শেষে টিম বাসে ওঠেন বাবররা। ওই সময় ইডেনের প্রাঙ্গণ জুড়ে পাকিস্তানের নামে মিছিল। কখনও পাকিস্তান, কখনও বাবর, কখনও রিজওয়ান এমন কি স্লোগান ওঠে কোচ গ্র্যান্ড ব্র্যান্ডম্যানকে নিয়েও।
এত স্লোগান শুনে কিছুটা থমকে গেলেন রিজওয়ানরা। হাত নাড়িয়ে জবাব দিলেন ভালোবাসার। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগেও বাস স্লো করে সবাই এক সাথে হাত নাড়ালেন। ক্রিকেটার ও ভক্তদের ভালোবাসার মেলবন্ধন অদ্ভুত রূপ দিল ইডেনের দুয়ারে।
অথচ এক ম্যাচ আগেই এই উত্তেজনা ছিল বাংলাদেশকে নিয়ে। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওমন হারের পর তা মিলিয়ে গেছে হাওয়ায়।
পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ দলও আজ অনুশীলন করে। সেখানে হাজির হন কয়েকজন ভক্ত। কিন্তু আগের দিনের মতো তাদের কণ্ঠে নেই কোনো আওয়াজ। আজ আর সাকিব-মুস্তাফিজ বলেও নেই স্লোগান। এক কোণে বসে নীরবে দেখছিলেন বাংলাদেশের অনুশীলন। কল্পনায় হয়ত ভাবছিলেন, কাল মঙ্গলবার ইডেনের বাজবে কার জয়গান?