তাসকিনদের ঢাকাকে থামিয়ে জয়ে ফিরল চট্টগ্রাম
শুষ্ক আবহাওয়ায় নিজেদের ইনিংসে টি-টোয়েন্টি সুলভ খেলতে পারেনি দুর্দান্ত ঢাকা। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পরে টেনেটুনে স্কোরবোর্ডে ঢাকা তোলে মাত্র ১৩৬ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যা জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। হলো সেটাই। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। ১০ বল হাতে রেখেই জয়ে ফিরেছে বন্দর নগরীর দলটি।
বিপিএলের পঞ্চম ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেছে চট্টগ্রাম। জয় দিয়ে শুরু করা দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছিল খুলনা টাইগার্সের কাছে। এবার তৃতীয় ম্যাচে এসে ফের জয়ে ফিরল। এই নিয়ে তিন ম্যাচে তাদের জয় দুটিতে, একটিতে হার। অন্যদিকে জয় দিয়ে শুরু করেছিল ঢাকা। প্রথম ম্যাচে জিতেছিল শক্তিশালী কুমিল্লার বিপক্ষে। সেই ঢাকা আজ হেরে গেল চট্টগ্রামের কাছে।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আট উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৩৬ রানে তোলে ঢাকা। দলটির হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন লাসিথ ক্রুসপুল্লে।
জবাব দিতে নেমে ১৮.২ ওভারে জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। রান তাড়ায় শুরুতে চড়াও ছিল চট্টগ্রাম। শরিফুলের করা প্রথম ওভারের শুরুর পাঁচ বলেই চট্টগ্রাম নেয় ১৯ রান। সেই ওভারেই অবশ্য আঘাত হানেন শরিফুল। তুলে নেন আবিস্কা ফার্নান্দোর উইকেট। ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ফার্নান্দো।
চট্টগ্রাম শিবিরে দ্বিতীয় আঘাতটাও আনেন শরিফুল। শরিফুল। এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন ওয়ানডাউনে নামা ইমরানুজ্জামানকে। দলীয় ২৮ রানে চট্টগ্রাম হারায় দ্বিতীয় উইকেট।
জোড়া ধাক্কা খাওয়ার পরও ওপেনার তানজিদ তামিম ও শাহাদাত হোসেন দিপুর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। দুজন মিলে তৃতীয় জুটিতে যোগ করেন ৫৩ রান। তাতেই জয়ের পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। দলীয় ৮১ রানে শাহাদাত ফিরলেও খুব একটা সমস্যায় পড়েনি। ৪৯ রানের ইনিংস খেলে দলের কাজটা আরও সহজ করেন তানজিদ হাসান তামিম। ৪০ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। শেষ দিকে ১৯ বলে ৩২ রান করে জয় নিশ্চিত করেন নাজিবুল্লাহ জাদরান।
এর আগে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক শুভাগত হোম। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি ঢাকার।
ইনিংসের শুরুতেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন লঙ্কান ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকা। তার মাঠ ছাড়ার পর সাইফ হাসানও বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ১১ রানের মাথায় আল আমিন হোসেনের বলে নাজিবউল্লাহ জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাইফ। ৯ বলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
সাইফের বিদায়ের পর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও টিকতে পারেননি। দলীয় ১৬ রানের মাথায় শুভাগহ হোমের বলে নাহিদউজ্জামানের হাতে ধরা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার বিদায়ের পর গত ম্যাচে দারুণ খেলা নাইম শেখও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি।
দলীয় ৩১ রানের মাথায় নিহাদউজ্জামানের বলে ৮ রান করে বিদায় নেন নাঈম। নাঈমের পর অ্যালেক্স রসও সাজঘরে ফেরেন মাত্র দুই রানের ব্যবধানে। এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে ১১ রানের বেশি আসেনি। সবমিলিয়ে ৩৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে ঢাকা।
সেই চাপ সামাল দেওয়ার দায়িত্বটা নেন ইরফান শুক্কুর ও লাসিথ ক্রুসপুল্লে। এই জুটিতে যোগ হয় ৪৯ বলে ৭৫ রান। দলীয় ১০৬ রানের মাথায় কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে শুভাগত এর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ক্রিসপুল্লে। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ৪৬ রান।
এরপর আর কোনো ব্যাটার আস্থার প্রতিদান দিতে না পারায় শেষমেশ ১৩৬ রানে থামে ঢাকা। চট্টগ্রামের হয়ে বিল্লাল খান ও আল আমিন হোসেন দুটি করে উইকেট নেন।