তাইওয়ান আক্রমণের সক্ষমতার কাছাকাছি চীন : প্রতিবেদন
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাইওয়ান আক্রমণের প্রাথমিক সক্ষমতা অর্জন করেছে অথবা কাছাকাছি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশন (ইউএসসিসি) গত বুধবার কংগ্রেসে দেওয়া তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পিএলএ’র কয়েক দশকের সমন্বিত আধুনিকীকরণ তাইওয়ান প্রণালিতে সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তন করেছে, যার পাল্লা বেইজিংয়ের দিকে বেশি ঝুলছে। চীন পিএলএ’র আধুনিকায়নে পরিকল্পিত ও ধারাবাহিকভাবে কাজ করে গেছে। ফলে, ভূমি ও সমুদ্রসীমা—দুই ক্ষেত্রেই তারা ব্যাপক উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি চীন তাদের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে বলেও ইউএসসিসির ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে, সক্ষমতা অর্জন করলেও চীন হয়তো শিগগিরই তাইওয়ান আক্রমণ করবে না বলে জানিয়েছে ইউএসসিসি। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে—চীনের জন্য ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দেশটির অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর। তাইওয়ানে আগ্রাসন চালালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হবে। তা না হলেও তাদের সঙ্গে অন্তত বাণিজ্য যুদ্ধ যে শুরু হবে সেটা নিশ্চিত। ফলে, এমন ঝুঁকি গ্রহণের পথে এখনই হাঁটছে না বেইজিং।
তবে পরিস্থিতি যে ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট। তাইপে ও বেইজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ওয়াশিংটনের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের অত্যাধুনিক সংস্করণ পেয়েছে তাইওয়ান। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের কাছ থেকে পাওয়া সামরিক সহযোগিতার প্রশংসাও করেছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন, যা বিক্ষুব্ধ করেছে চীনের শি জিনপিং সরকারকে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের সামরিক সহযোগিতার কথা আগেই প্রকাশ করেছিলেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। তিনি আগেই বলেছিলেন, তাইওয়ানে কিছু মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। তারা তাইওয়ানের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। চীন যদি তার দেশে আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে তার দেশের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৪৯ সালে একটি গৃহযুদ্ধের সময় চীন ও তাইওয়ান বিভক্ত হয়। এর পর থেকে বেইজিং দ্বীপটির সঙ্গে পুনরায় একত্রিত হওয়ার জন্য ক্রমাগত শক্তি প্রয়োগ করে যাচ্ছে।