গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা গজায় যুদ্ধবিরতিতে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি নাগরিকরা। আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কারণ হিসেবে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানায়, হামাস সময়মতো জিম্মিদের তালিকা না দেওয়ায় ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি শুরু করতে দেরি হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। আল জাজিরার গাজার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ মধ্য দেইর এল-বালাহ শহরের উচ্ছ্বসিত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সাথে কথা বলেন। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি এক নারী আল জাজিরাকে জানান, ‘আজকের দিনটি আমার জীবনের অত্যন্ত আনন্দের। যুদ্ধ চলাকালে আমরা মানুষকে টুকরো টুকরো হতে দেখেছি। তাই এই চুক্তি আমাদের জন্য সুসংবাদ। যুদ্ধবিরতিতে আমি খুবই খুশি। তিনি আরও বলেন, যারা যুদ্ধবিরতিতে ভূমিকা রেখেছেন আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি এক তরুণ বলেন, ‘এখন আমাদের বিশ্রাম নেওয়ার সময়। আমরা যে অবিরাম ভয়াবহতার মধ্যে ছিলাম, তা থেকে আজ আমরা মুক্তি পেলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য স্বস্তি। এই গণহত্যার সময় অনেকের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। আমি কেবল আমার শিক্ষাজীবন সম্পূর্ণ করতে চাই।’
ফিলিস্তিনি ওই তরুণ আল-জাজিরাকে আরও জানান, ‘এখন আমরা সবাই খুশি। বিশেষ করে শিশুদের জন্য যুদ্ধবিরতি সত্যিই খুশির সংবাদ। আশা করি ইসরায়েলিরা আগামীতে এই চুক্তি লঙ্ঘন করবে না।’
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে যেতে থাকে। হামাস-পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ১৩ জন নিহত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক ইসরায়েলে হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্বর এ বাহিনীর নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।