ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলা : রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর মামলার অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ফরেনসিক ও ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট, আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ শেষে প্রতীয়মান হয়েছে যে, রবিউল ইসলাম এই হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত। সেই সঙ্গে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রবিউল ইসলাম।‘
ইমাম জাফর আজ শনিবার বিকেলে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৭-এ এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এ সময় ইউএনওর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁকেও জখম করা হয়। পরে কোয়ার্টারের অন্য বাসিন্দারা তাঁদের চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় আনা হয়। রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল এবং পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসা নেন তিনি।
এ ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বড় ভাই শেখ আরিফ হোসেন বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ মামলায় এখন রবিউল ইসলাম ছাড়াও জেলহাজতে আছেন নবিরুল ইসলাম, সান্টু কুমার, উপজেলা যুবলীগের সদস্য আসাদুল হক ও জাহাঙ্গীর আলম।
রবিউল ইসলাম ইউএনও ওয়াহিদার কার্যালয়ে মালি হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর ব্যাগ থেকে টাকা চুরির অভিযোগে গত জানুয়ারি মাসে বরখাস্ত হন রবিউল। গত ৯ সেপ্টেম্বর রবিউলকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ২০ সেপ্টেম্বর তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন।
হামলার পর ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এবং তাঁর স্বামী মো. মেজবাউল হোসেনকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। তাঁরা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। ওয়াহিদা খানম ৩১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তাঁর স্বামী মেজবাউল হোসেনও একই ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।